Blood Donation Camp

নতুন জীবনের শুরুতে আয়োজন রক্তদানের

দমকলকর্মী শেখ সাহিদুল রহমান বর্ধমান শহরের মিরছোবা দক্ষিণ এলাকার বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২১
Share:

বিয়ে উপলক্ষে রক্তদান শিবির। নিজস্ব চিত্র

নিজের আনন্দের দিনে অন্যদেরও পাশে দাঁড়ালেন বর্ধমানের এক দমকল কর্মী। সোমবার তাঁর বৌভাতের অনুষ্ঠানে এসে রক্ত দেন আমন্ত্রিতদের একাংশ। বিকেলে বর্ধমান স্টেশনে ভবঘুরেদের পাতে খাবারও তুলে দেন ওই দম্পতি।

Advertisement

দমকলকর্মী শেখ সাহিদুল রহমান বর্ধমান শহরের মিরছোবা দক্ষিণ এলাকার বাসিন্দা। এ দিন তাঁর বৌভাতে হাজির থাকা প্রায় ৫০ জন অতিথি রক্তদান করেছেন। এ রকম চিন্তা-ভাবনার কারণ কী? শাহিদুল বলেন, ‘‘দেখেছি, রক্তের জন্য মানুষ কী ভাবে হাহাকার করে। ওই সময়ে অসহায় হয়ে পড়েন। সামান্য রক্তদান একটা জীবনকে বাঁচাতে পারে। ওই ভাবনা থেকেই এই আয়োজন। বাড়ির সকলেই আমার উদ্যোগের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’ পরিজনদের অনেককেই বলতে শোনা যায়, ‘‘এর চেয়ে ভাল ভাবে নতুন জীবন শুরু হতে পারত না। কত মানুষের আশীর্বাদ পাবেন নবদম্পতি!’’

জানা গিয়েছে, বর্ধমানের একটি বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত সংগ্রহ করেছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শিবিরটিকে সংগঠিত করেছে। ওই সংস্থার কর্তা শুভদীপ প্রামাণিক বলেন, ‘‘একে শীতকাল, তার উপর কোভিড-পরিস্থিতি। ভোটের দামামাও বাজতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিটি ব্লাড ব্যাঙ্কেই রক্তের সঙ্কট চলছে। শাহিদুল আমাদের সঙ্গে থাকেন। বৌভাতের অনুষ্ঠানে রক্তদান শিবিরের আয়োজনের কথা বলতেই উনি লুফে নেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে রক্তদান শিবির, জেলায় আগে হয়েছে বলে জানা নেই।’’ শিবিরে যোগ দিতে কেতুগ্রামের রাজুর গ্রাম থেকে এসেছিলেন বিভোর আচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এক দিকে বৌভাতের অনুষ্ঠান হচ্ছে, আর এক দিকে রক্তদান চলছে। এই দৃশ্য দেখে সবাই অনুপ্রাণিত হলে, রক্তদান আন্দোলন সার্থক হবে।’’

Advertisement

বর্ধমান শহরের বিবেকানন্দ কলেজের কাছে পুরসভার একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে দুপুরে বসেছিল বৌভাতের আসর। সেখানেই একতলায় চলছিল রক্তদান শিবির। সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন নববধূ রোকেয়া সুলতানা। তিনি জানান, নতুন জীবনে প্রবেশ করার সময়ে এ রকম ভাল কাজের সাক্ষী থাকতে পেরে খুবই আনন্দিত তিনি। সন্ধ্যায় বর্ধমান স্টেশনে ভবঘুরেদের হাতে খাবার তুলে দেন শাহিদুল। তাঁর পরিচিত শেখ মফিজুর রহমান, ইলিয়াস চৌধুরিরা বলেন, ‘‘বিয়ে বাড়ি মানেই যে শুধু নিজেদের আনন্দ নয়, সেটা বুঝতে পারলাম। সকালে রক্তদান, রাতে অসহায় মানুষের হাতে খাবার তুলে দেওয়া—এই বিয়ে বাড়ির কথা সবাই মনে রাখবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement