—ফাইল চিত্র
‘মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট’ দেওয়ার নাম করে এক আধিকারিক ঘুষ চেয়েছেন বলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন আইন বিভাগের এক ছাত্রী। সোমবার বিকেলে ওই অভিযোগ জানানোর পরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম সমর্থিত কর্মী সংগঠন ‘বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মী সংগঠন’ সহকারী রেজিস্ট্রার (৩) পদে থাকা অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বারুইকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদও পুরো ঘটনার তদন্তের দাবি করেছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্তা গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সল্টলেক ক্যাম্পাসে আছেন। ঘটনার কথা শুনেছি। খোঁজ নেওয়ার পরে সত্যতা পাওয়া গেলে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির ওই ছাত্রী রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগের চিঠিতে জানিয়েছেন, তিনি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান বলে ‘মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট’ পেতে আবেদন করেছিলেন। নিয়মমাফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাশ কাউন্টারে ২২০ টাকা জমা করে, চালান নিয়ে আবেদনের সঙ্গে তা জমা দেন। কিন্তু এ দিন ওই শংসাপত্র আনতে গিয়ে এক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করতে হয় তাঁকে। এর পরেই সহকারী রেজিস্ট্রারের (৩) সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। অভিযোগ, ওই আধিকারিক তাঁর কাছে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। ওই টাকা দিলে তাড়াতাড়ি সার্টিফিকেট মিলবে, না হলে অন্যদের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হবে বলেও জানান। চিঠিতে ওই ছাত্রীর দাবি, টাকা না থাকায় তিনি বাড়ি ফিরে যান। এ ধরনের হেনস্থা যাতে অন্য পড়ুয়াদের না হয়, সেই কারণে তিনি বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন’।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম সংগঠনের পদাধিকারীদের অভিযোগ, শুধু ওই ছাত্রী নয়, আরও কয়েকজনের কাছ থেকে একই রকম ভাবে ‘ঘুষ’ আদায় করেছেন সহকারী রেজিস্ট্রার (৩)। বেশ কিছুদিন ধরে এ রকম অভিযোগ কানে আসছিল, সোমবার তার প্রমাণ পাওয়া গেল, বলেও তাঁদের দাবি। ছাত্রীকে তাঁরা রেজিস্ট্রারের দফতরে নিয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরে, ওই ছাত্রী অভিযোগ জানান।
সংগঠনের সম্পাদক বুদ্ধদেব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অভিযোগের পরেই রেজিস্ট্রারের দফতর থেকে কৃষ্ণচন্দ্রবাবুকে ডেকে পাঠানো হয়। আমরা তাঁকে ঘিরে ক্ষোভও দেখিয়েছি। বুধবার রেজিস্ট্রারের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হবে।’’ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিষদ ইউনিটের নেতা খোন্দেকার আমিরুল ইসলামের দাবি, “অভিযোগ জমা পড়েছে শুনেছি। আমরাও এই অভিযোগের তদন্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলেছি।’’
তবে এ রকম গুরুতর অভিযোগের প্রসঙ্গে এড়িয়ে কৃষ্ণচন্দ্রবাবু শুধু বলেন, “চালান কেটে মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট নিতে হয়। অন্য কোনও ভাবে নেওয়া হয় না।’’