Death

TMC-BJP: মৃত্যু নিয়ে রাজনীতির নালিশ

বিজেপি বিধায়ক এলাকায় আসতেই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা অভিযোগ তোলেন, বিধায়ক রাজনীতি করতে এসেছেন। তাই তাঁর গলায় বিজেপির দলীয় উত্তরীয় রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

দুর্গাপুর ও আসানসোল শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৮:১৮
Share:

দুর্গাপুরের মৃত দম্পতির বাড়িতে লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। নিজস্ব চিত্র।

উত্তরাখণ্ডে বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পশ্চিম বর্ধমানের পাঁচ পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনার আঁচ পড়ল জেলার রাজনীতিতেও। বিজেপি ও তৃণমূল—দুই শিবিরেই দেখা গিয়েছে তৎপরতা। উঠেছে ‘মৃত্যু নিয়ে রাজনীতির’ অভিযোগও।

Advertisement

ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে রানিগঞ্জের সিহারসোলের কিশোর ঘটক, চন্দনা খান, আসানসোলের শ্রাবণী চক্রবর্তী এবং দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা, দম্পতি সুব্রত ভট্টাচার্য এবং রুনা ভট্টাচার্যের।

দুর্ঘটনায় দুর্গাপুরের দম্পতির মৃত্যুর খবর পেয়ে বুধবার রাত ১০টা নাগাদ তাঁদের ছেলে সুদীপ্তর সঙ্গে দেখা করেন স্থানীয় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশীল চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ থানা থেকে খবর পেয়ে তিনি ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। এর পরে, বৃহস্পতিবার সুব্রতর সঙ্গে দেখা করতে আসেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তিনি সুদীপ্তকে উত্তরাখণ্ডে তাঁদের দলের সংগঠনের দায়িত্বে থাকা কয়েক জনের ফোন নম্বর দিয়ে প্রয়োজনে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে বিধায়ক হিসাবে তিনি প্রয়োজনীয় সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

এ দিকে, বিজেপি বিধায়ক এলাকায় আসতেই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা অভিযোগ তোলেন, বিধায়ক রাজনীতি করতে এসেছেন। তাই তাঁর গলায় বিজেপির দলীয় উত্তরীয় রয়েছে। বিধায়ক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যখন কথা বলছিলেন, তখন তৃণমূল কাউন্সিলর সুশীল তাঁকে ‘কেন তিনি বিজেপির উত্তরীয় গলায় দিয়ে এসেছেন’ সে প্রশ্নও করেন। তিনি অভিযোগ করেন, “বিধায়ক দলীয় প্রচার করছেন।” বিধায়ক উত্তর দেন, “আমি জনপ্রতিনিধি হিসাবে এসেছি। একটি দলীয় কর্মসূচি থেকে সোজা এখানে এসেছি। তাই উত্তরীয় রয়ে গিয়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসাবে একটি বিপদে পড়া পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছি।” কাউন্সিলর পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আমি গত রাত থেকে রয়েছি। আপনি তখন কোথায় ছিলেন? মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করতে এসেছেন?” লক্ষ্মণ এর পরে বলেন, “বিধানসভা থেকে বুধবার রাতে ফিরেছি। খবর পেয়ে, সকালে এসেছি। মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি তৃণমূল করে। সারা রাজ্য থেকে দেহ নিয়ে গিয়ে কলকাতায় মিছিল আপনারাই করতেন।” তবে তরজা নয়, বরং এই মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত, এমনই আর্জি জানিয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার।

পাশাপাশি, তৃণমূল ও বিজেপি, দুই শিবিরেই দেখা গিয়েছে তৎপরতাও। আসানসোলের দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারটির কথা শুনে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকালে মহিশীলার বাসিন্দা মৃত শ্রাবণী চক্রবর্তীর বাড়িতেও যান তিনি। কিন্তু বাড়িতে তালা দেওয়া থাকায় পড়শিদের সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত খোঁজখবর করেন। তিনি বলেন, “প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসককে অনুরোধ করেছি।” এ দিকে, আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিষয়টি নিয়ে দিল্লির রেসিডেন্ট কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে দাবি করেছেন। অগ্নিমিত্রা বলেন, “রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গেও কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।” বিষয়টি রাজ্যপালেরও নজরে এনেছেন বলে জানান জিতেন্দ্র। পাশাপাশি, তৃণমূল নেতা বাবুল সুপ্রিয়র আর্জি, “জম্মু ও কাশ্মীরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত আট জনের পরিবারের জন্য দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাই। উত্তরাখণ্ডে আসানসোলের বাসিন্দাদের মৃত্যু ও জখম হওয়ার ঘটনাতেও একই ক্ষতিপূরণ দিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি।” দেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বাগেশ্বর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement