খোলামুখ কয়লাখনি থেকে এক কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পর ওই খনির সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। —নিজস্ব চিত্র।
আসানসোলের সালানপুরে একটি খোলামুখ কয়লাখনি থেকে এক তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হল। বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ ওই তরুণী কী ভাবে কয়লাখনিতে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তাঁর পরিবার। ওই তরুণীকে হত্যা করা হয়েছে, না সে আত্মহত্যা করেছে, নাকি এই মৃত্যু দুর্ঘটনাজনিত— তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের সঙ্গে যৌথ তদন্তে নেমেছেন ডাবর কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় খোলামুখ কয়লাখনির সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সালানপুরের আলকুশা ডাঙাল পাড়ার বাসিন্দা ওই তরুণীর নাম ঊষা বাউড়ি (১৮)। স্থানীয় ডাবর কোলিয়ারিতে একটি খোলামুখ কয়লাখনি থেকে শুক্রবার সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের কাছে ঊষার পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, ডাবর খোলামুখ খনিতে একটি মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে। সেখানে গিয়ে তরুণীর বাবা বরুণ বাউড়ি-সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা দেখেন যে দেহটি ঊষারই।
কী ভাবে তাঁর মেয়ের মৃত্যু হল, তা জানতে চান কিশোরীর বাবা বরুণ বাউড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
ঊষা কী ভাবে ওই কয়লাখনিতে পৌঁছলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর বাবা বরুণ বাউড়ি। খনিতে ঝাঁপ দিয়ে তাঁর মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন নাকি পা পিছলে সেখানে পড়ে গিয়েছেন, নাকি তাকে কেউ খুন করে ফেলে রেখে গিয়েছে— পুলিশের কাছে তা জানতে চেয়েছেন বরুণ। বরুণ বলেন, “দুপুরবেলায় বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করল আমার মেয়ে। বিকেলবেলা বাইরে গিয়েছিল। তার পর থেকে আর বাড়ি ফেরেনি। সারা রাত ধরে আমরা খোঁজাখুঁজি করেছি। যাদের সঙ্গে পড়াশোনা করে, তাদের বাড়িতেও গিয়েছিলাম। সেখানেও যায়নি। শুক্রবার আমরা সকলে মিলে দেখতে পাই, খনিতে পড়ে রয়েছে ঊষা। কী ভাবে মৃত্যু হল ওর?’’
সালানপুর থানার পুলিশ সূত্রে খবর, ডাবর কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। এলাকায় ওই কয়লাখনির সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ে এখানে ঝাঁপ দিয়েছে, নাকি ও পা পিছলে পড়ে গিয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।’’
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (ওয়েস্ট) অভিষেক মোদী বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্ত করে সবিস্তার রিপোর্ট নিয়ে মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হবে।’’