—প্রতীকী ছবি।
বাড়ির পাশে গাছে ঝুলছিল এক ব্যক্তির দেহ। সকালে তা দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীরা তাঁর বাড়িতে যান। সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল তাঁর স্ত্রীর দেহ। পাশে একটি রক্তমাখা হাতুড়ি। শুধু তাই নয়, খানিক পরেই খবর মেলে, ওই পাড়াতেই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে মৃতের এক আত্মীয়ার দেহ। আসানসোলের গাড়ুইয়ে স্ত্রী ও আত্মীয়াকে খুন করে ওই ব্যক্তি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
পুলিশ জানায়, গাড়ুইয়ের ঘোষপাড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত ঘোষ (৪৫) জমির দালালের কাজ করতেন। স্ত্রী শিবানী ঘোষ (৪২) ও বছর কুড়ির ছেলেকে নিয়ে থাকতেন তিনি। ওই পাড়াতেই থাকতেন তাঁর এক জেঠতুতো ভাইয়ের স্ত্রী নীলিমা ঘোষ (৩৮)। তাঁর ১৪ ও ১১ বছরের দুই ছেলে রয়েছে। বছর সাতেক আগে নীলিমাদেবীর স্বামীর মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, সম্প্রতি প্রশান্তবাবুর সঙ্গে নীলিমাদেবীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়। তার জেরে সংসারে অশান্তি হতো।
নীলিমাদেবীর দুই ছেলে জানায়, শনিবার রাতে তারা বাড়িতে ছিল না, ঠাকুর দেখতে গিয়েছিল। তবে তার আগে তাদের মা প্রশান্তবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। রাতে বাড়িতে ছিলেন না প্রশান্তবাবুর ছেলেও। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, নীলিমাদেবীকে বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন শিবানীদেবী। তাঁদের দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। রাত ১১টা নাগাদ প্রশান্তবাবু বাড়ি ফিরে দু’জনকে গোলমাল করতে দেখে হাতুড়ি নিয়ে স্ত্রীকে মারধর শুরু করেন। তা দেখে নীলিমাদেবী বাড়ি চলে যান। পরে সেখানে গিয়ে চড়াও হন প্রশান্তবাবু।
এ দিন সকালে বাড়ির সামনে আমগাছে প্রশান্তবাবুর ঝুলন্ত দেহ মেলে। তাঁর বাড়ির দরজা খোলা ছিল। ভিতরে শিবানীদেবী পড়ে ছিলেন। তাঁর মাথা ক্ষতবিক্ষত। নীলিমাদেবীর বাড়িতে গিয়েও এক দৃশ্য দেখা যায়। প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। এত সব ঘটনা ঘটলেও তাঁরা কিছু টের পাননি বলে জানিয়েছেন আশপাশের বাসিন্দারা।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (সেন্ট্রাল) বরুণ বৈদ্য জানান, তিনটি দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রক্তমাখা হাতুড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, ওই হাতুড়ি দিয়েই দু’জনকে খুন করেন প্রশান্তবাবু। তার পরে আত্মঘাতী হন। এসিপি বরুণবাবু বলেন, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরেই এমন ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।’’