মথুরাচণ্ডী ঘাটে চলছে তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র।
দামোদরের পশ্চিম বর্ধমানে মথুরাচণ্ডী ঘাট লাগোয়া এলাকায় তিন জন একাদশ শ্রেণির ছাত্র নিখোঁজ হয়েছিল মঙ্গলবার। এর পরে, বুধবার সকালে দামোদর থেকে অভিষেক মিশ্র (১৭) ও রোশন সিংহ (১৭) নামে যথাক্রমে রানিগঞ্জের কেজি লেন ও ভগৎপাড়ার বাসিন্দা দুই ছাত্রের দেহ উদ্ধার করা হয়। রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি অভিষেক মেহেতা নামে নিখোঁজ আরও এক জনের। অবৈধ বালি কারবারের জন্য এই দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছে সিপিএম।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে বাঁকুড়ার মেজিয়া থানা ও পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ থানার উদ্যোগে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের উদ্ধারকারী দল গেলেও অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজ শুরু করা যায়নি। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের উদ্ধারকারী দল সকাল সওয়া ৮টা নাগাদ অভিষেক মিশ্র ও ৯টা নাগাদ রোশনের দেহ উদ্ধার করে।
ওই তিন ছাত্রের পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা তিন জনই সাঁতার জানত না। রোশনের দাদু গুপ্তেশ্বর সিংহ জানান, তাঁর তিন নাতি। সবার ছোট রোশন। রোশনের মা সরিতাদেবী কথা বলার মতন অবস্থায় ছিলেন না এ দিন। কেজি লেনের বাসিন্দা ছিলে অভিষেক মিশ্রের বাবা কামেশ্বর মিশ্র শিলংয়ে বিদ্যুৎ দফতরে কর্মরত। অভিষেকের মামা আনন্দ মিশ্র জানান, অভিষেকরা এক ভাই ও এক বোন। ঘটনার পরে অভিষেক মিশ্রের মা সুচিত্রাদেবী ও বোন প্রিয়া বারবার সংজ্ঞা হারাচ্ছিলেন। বড়দহির বাসিন্দা অভিষেক মেহেতার বাবা, পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অজয়বাবু বলেন, “সাঁতার না জানা সত্ত্বেও কেন তিন জন দামোদরে নামতে গেল জানি না। জানি না, আমার ছেলেটা কোথায় আছে।’’
এ দিকে, এই ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি লিখে অবৈধ বালির কারবারের বিষয়ে সরব হওয়ার কথা জানিয়েছেন রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘বালি মাফিয়ারা নদের যেখানে-সেখানে বালি কাটছে। এর ফলে, দামোদর অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এই দুর্ঘটনাও এই কারণে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যথাযথ পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যও আবেদন করেছি।’’