Boarting

গুড়ের গন্ধ, ভাটিয়ালির সুরে শুরু খাল-বিল উৎসব

এ বার উৎসব শুরু হওয়ার আগের দু’দিন জলাভূমি রক্ষা এবং চুনো মাছ সংরক্ষণের ডাক দিয়ে বাঁশদহ বিল লাগোয়া গ্রামগুলিতে চলে সচেতনতা প্রচার। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

পূর্বস্থলীর বাঁশদহ বিলে নৌকা ভ্রমণ। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।

শাপলা ফুল, খেজুর গুড়ে অতিথিবরণ, বাঁশদহ বিলে নৌকা ভাসিয়ে খাল-বিল উৎসব শুরু হল পূর্বস্থলীতে। কুড়ি বছরে পা দিল উৎসব। উদ্যোক্তাদের দাবি, স্বাস্থ্যবি-ধি মেনেই শুক্র-শনিবার দু’দিনের উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। অন্য বারের তুলনায় ভিড় কম বলেও দাবি তাঁদের।

Advertisement

আর্সেনিকের থাবা পড়া পূর্বস্থলীতে জলাভূমি বাঁচানোর ডাক দিয়ে দু’দশক আগে এই উৎসব শুরু করেন বর্তমান প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। এ বার উৎসব শুরু হওয়ার আগের দু’দিন জলাভূমি রক্ষা এবং চুনো মাছ সংরক্ষণের ডাক দিয়ে বাঁশদহ বিল লাগোয়া গ্রামগুলিতে চলে সচেতনতা প্রচার।

সূর্যোদয়ের আগেই এ দিন শুরু হয়ে যায় উৎসব। বিলের চারপাশে তৈরি করা হয় চারটি মঞ্চ। একটি ভাসমান মঞ্চে সারা দিন চলে বাউল, পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি। বেলা বাড়তেই বিলের পাড়ে আসেন জেলাশাসক এনাউর রহমান, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহ সভাধিপতি দেবু টুডু, মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তিরা। শীতের সকালে বিলের পাড় থেকে তোলা শাপলা ফুল দিয়ে বরণ করা হয় তাঁদের। উপহার হিসেবে দেওয়া হয় বিল লাগোয়া গাছ থেকে তৈরি খেজুর গুড়ের পাটালি।

Advertisement

উৎসবে আমন্ত্রিতদের জন্য বিলের পাড়ে তাঁবুতে সময় কাটানোর সুযোগ ছিল। দুপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল বিলের পাড়েই। মেনুতে ছিল ভাত, বেগুনপোড়া, ধনেপাতা বাঁটা, ডাল, তেল কই, চুনো মাছ ভাজা, মুড়িঘণ্ট, কাতলা মাছের কালিয়া, চাটনি, এবং নলেন গুড়ের পায়েস। বহু মানুষ সন্ধ্যা নামার আগে পর্যন্ত নৌকায় বিল ঘোরেন। দু’দিনের উৎসবে বসেছে মেলাও। উদ্যোক্তারা জানান, দ্বিতীয় দিন হাঁস বিলি, আঁকো প্রতিযোগিতা, ডিঙি বাইচ প্রতিযোগিতা রয়েছে। মাস্কও বিলি করা হবে। বিলের জলে প্রদীপ ভাসিয়ে শেষ হবে উৎসব।

গত পাঁচ বছর ধরে ধাপে ধাপে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বাঁশদহ বিল। লম্বা বিলের নীচের মাটি তুলে বাড়ানো হয়েছে গভীরতা। দু’পাশে যাতায়াতের জন্য তৈরি হয়েছে সেতু, রাস্তা। লাগানো হয়েছে রঙিন আলো। পর্যটকদের জন্য তৈরি হয়েছে আবাস। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিলের পাড়ে বসার জায়গা-সহ আরও একগুচ্ছ পরিকল্পনা রয়েছে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘বাঁশদহ বিলকে ঘিরে আমরা ইকো টুরিজম গড়ার লক্ষে এগিয়ে চলেছি। ধাপে ধাপে কাজ চলছে।’’ তিনি জানান, পর্যটকেরা সুন্দর জলাশয়ে ঘুরতে এবং সেখানে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দেখতে ভালবাসেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাঁশদহ বিল সেই দিক থেকে আদর্শ। জেলাশাসক বলেন, ‘‘কংক্রিটের জঙ্গল ফেলে সাধারণ মানুষ বেড়াতে ভালবাসেন। প্রকৃতির মাঝে এমন পরিবেশে প্রচুর মানুষ আসবেন। প্রয়োজন শুধু প্রচারের।’’ পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী, আরও কাজ করারও আশ্বাস দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement