BJP workers

দলের ত্রাণ ফেরালেন ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীরা

আউশগ্রামের ভাল্কি পঞ্চায়েত এলাকার প্রেমগঞ্জের ওই পরিবারগুলির দাবি, ভোটের ফল বেরনোর পরে তিন দিন ধরে জঙ্গলে রাত কাটাতে হয়েছে তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২১ ০৬:০১
Share:

নেতাদের সামনে ক্ষোভ জানাচ্ছেন কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।

ভোটের পর থেকে ‘ঘরছাড়া’ রয়েছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন বা দল কোনও তরফেই সাহায্য মেলেনি। বাধ্য হয়ে দেবশালা পঞ্চায়েত এলাকার ভাতকুণ্ডা গ্রামের ধারে জঙ্গলের জায়গায় তাঁবু খাটিয়ে রয়েছেন প্রায় তিরিশটি পরিবার। বৃহস্পতিবার বিজেপির বর্ধমান সদর জেলা সম্পাদক শ্যামল রায়ের নেতৃত্বে পাঁচ জনের একটি দল ত্রাণ নিয়ে সেখানে গেলে ওই কর্মীরা তাঁদের ফিরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। যদিও বিজেপির দাবি, তৃণমূল এবং নকশালেরা ভয় দেখিয়ে দলের ত্রাণ নিতে দেয়নি ওঁদের।

Advertisement

আউশগ্রামের ভাল্কি পঞ্চায়েত এলাকার প্রেমগঞ্জের ওই পরিবারগুলির দাবি, ভোটের ফল বেরনোর পরে তিন দিন ধরে জঙ্গলে রাত কাটাতে হয়েছে তাঁদের। পরে, গ্রাম থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে জঙ্গলে তাঁবু খাটিয়ে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। দলে আট মহিলা ও ছ’জন শিশুও রয়েছে। কনি বাগদি, কালী বাগদি, শিখা বাগদিদের দাবি, ‘‘সাপের উৎপাত আছে। তার উপরে এখন নিত্য ঝড়বৃষ্টি, বজ্রপাতে ভয়ে কাঁটা হয়ে আছি। দুধের শিশুদের নিয়ে তাঁবুর মধ্যে গাদাগাদি করে মাথা গুঁজে আছি।’’ বিজেপি কর্মী সুভাষ বাগদি, ধর্মদাস বাগদি, দুলাল বাগদিদেরও অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকজন ঘর ভেঙে সমস্ত জিনিস লুট করেছে। এখনও নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কয়েকজনের মাঠের ধান কাটতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘প্রথম দিকে, দলের জেলা কার্যালয়ে গিয়ে নেতাদের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা কোনও ভাবে পাশে দাঁড়াননি। বাঁচলাম কি মরলাম এত দিন খোঁজ না নিয়ে এত দিনে ত্রাণ দিতে এসেছেন! তাই ত্রাণ নেওয়া হয়নি।’’ স্থানীয় নকশালপন্থী একটি সংগঠনের সাহায্যে থাকছেন বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

সিপিআইএমএল (‌রেড স্টার) নামে ওই সংগঠনের জেলা সম্পাদক ফতেমা বেগম বলেন, ‘‘গরিব মানুষদের পাশে তাঁদের দল দাঁড়ায়নি। আমরা নৈতিকতার খাতিরে তাঁদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছি।’’ বিজেপির ৫৩ নম্বর মণ্ডল কমিটির সহ সভাপতি পিন্টু মণ্ডলও বলেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে বারবার আর্জি জানাচ্ছি যাতে ঘরছাড়াদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। যতটা পারছি, পাশে থাকার চেষ্টা করছি।’’

Advertisement

যদিও শ্যামলবাবুর দাবি, ‘‘প্রথম দিকে, ওঁদের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের ঠিক ভাবে যোগাযোগ হয়নি। তাই ওঁদের কাছে পৌঁছতে পারিনি। তবে দলের দেওয়া ত্রিপল এবং পোশাক ব্যবহার করছেন ওঁরা। ঘরছাড়াদের একটা তালিকা আমরা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দিয়েছি।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার বলেন, ‘‘সমস্ত ঘরছাড়াদের ফেরানো হয়েছে। এখনও যাঁরা বাইরে আছেন, তাঁদের ফিরতে কোনও বাধা কেউ দেয়নি।’’ বিজেপি নেতার অভিযোগও মানেননি তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement