প্রতীকী ছবি
মাটিতে পড়ে রয়েছেন একজন। তাঁকে ঘিরে লাথি, বেল্ট দিয়ে পরপর সপাটে আঘাত করছে কয়েকজন। চলছে ঘুষিও। রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই একটি ভিডিয়ো (সত্যাসত্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ঘুরতে দেখা গিয়েছে। বিজেপির দাবি, ভিডিয়োর আক্রান্ত ব্যক্তি তাঁদের কর্মী। এই হামলা তৃণমূল ‘আশ্রিত’ দুষ্কৃতীরা চালিয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। শনিবার বিকেলে সালানপুর থানার রূপনারায়ণপুর লাগোয়া সামডি রোডের ঘটনা।
সালানপুর থানায় রবিবার বিজেপি অভিযোগ করে জানায়, আমডাঙা মোড়ের বাসিন্দা নন্দকিশোর চৌহানের বাড়িতে শনিবার দুপুর সাড়ে ৪টে নাগাদ এলাকায় তৃণমূলের সদস্য বলে পরিচিত কয়েকজন চড়াও হয়। নন্দকিশোরবাবুর অভিযোগ, বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা হয়। মহিলাদের উত্ত্যক্ত করা হয় বলেও অভিযোগ। এর পরে ওই দলটিকে তিনি বাড়ির বাইরে বার করে দেন বলে জানান নন্দকিশোরবাবু। অভিযোগ, এর পরেই তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে বার করে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধর দেখে এলাকাবাসীর একাংশ প্রতিবাদ করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। তার পরে নন্দকিশোরবাবুকে রাস্তায় ফেলে চম্পট দেয় ‘হামলাকারীরা’।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত জলের পাইপলাইন নিয়ে। সামডি রোড তৈরির কাজ চলছে। ফলে, রাস্তার মাটি খোঁড়ার সময়ে রাস্তার পাশে বসানো জলের ‘অবৈধ’ পাইপগুলি উপড়ে ফেলা হচ্ছে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়।
শুক্রবার থেকে আমডাঙা মোড় লাগোয়া এলাকায় মাটি কাটার কাজ চলছিল। ওই সময়ে এলাকার বাসিন্দা নন্দকিশোরবাবুর বাড়ির জলের পাইপটিও ওপড়ানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ওই রাতেই ফের পাইপলাইন জুড়তে উদ্যোগী হন নন্দকিশোরবাবু। সেই সময়ে এলাকায় তৃণমূলকর্মী বলে পরিচিত কয়েকজন তাঁকে বাধা দেন। নন্দকিশোরবাবুর অভিযোগ, ‘‘ওরা আমাকে বলছিল, আমি বিজেপি করি বলে পাইপ বসাতে পারব না।’’ তখনকার মতো বিষয়টি মিটে যায়। শনিবার সকালে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নেন বলেও জানান ওই বিজেপি কর্মী। কিন্তু তার পরেই এই হামলা বলে অভিযোগ। নন্দকিশোরবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমি বিজেপি করি, এটা বারবার বলে ওরা আমাকে মারছিল।’’
সালানপুরের বিজেপি নেতা গোপাল রায়ও বলেন, ‘‘এলাকায় আমাদের দলের সমর্থক, কর্মীদের উপরে তৃণমূল হামলা চালাচ্ছে।’’ তবে হামলা, মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের বারাবানি ব্লক সভাপতি মহম্মদ আরমান। তাঁর কথায়, ‘‘এটা পাইপলাইন বসানোকে কেন্দ্র করে অশান্তি। দলের কেউ জড়িত নন। ভিড়ের মাঝে কারা মারধর করেছেন, তা দলের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। পুলিশের তদন্তে সত্যিটা সামনে আসবে।’’
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।