বিজেপির থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে। নিজস্ব চিত্র
দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার সকালে বিজেপির দুর্গাপুর থানা ঘেরাও কর্মসূচি এবং কুমারমঙ্গলম পার্কের ভিতর অন্য একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হল দুর্গাপুরে। দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, মাধ্যমিক পরীক্ষার মরসুমে ‘লাউডস্পিকার’ ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও বিজেপি এর জন্য ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ করেছে।
এ দিন দুপুরে দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের কুমারমঙ্গলম পার্কের ফুডপ্লাজ়ায় ‘অন্তরাষ্ট্রীয় হিন্দি পরিষদ’ নামে একটি সংগঠনের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে যোগ দেন দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তি, আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং দুর্গাপুরের কাউন্সিলরদের অনেকে।
এই অনুষ্ঠানের আয়োজনকে কেন্দ্র করে পার্ক পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থাকা বেসরকারি সংস্থার দ্বন্দ্ব বাধে আয়োজক সংগঠনের। পাশাপাশি, শনিবার বেসরকারি সংস্থার কর্তাকে মারধর, পার্কের রেস্তরাঁয় ভাঙচুর ও গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কাউন্সিলর রাজীব ঘোষ এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগও করে বিজেপি। পুলিশ যদিও গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে। যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্ত কাউন্সিলরও। বিজেপি অভিযোগ করে, বেসরকারি সংস্থার কর্তা দেবাশিস রায় তাঁদের নেতা বলেই এই হামলা।
ওই হামলার অভিযোগে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার সকালে বিজেপি থানা ঘেরাও কর্মসূচি নেয়। থানার গেটে থাকা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন বিজেপির মিছিলের সামনে থাকা মহিলাদের একাংশ। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই-সহ অন্য নেতৃত্ব তাঁদের নিরস্ত করে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেন। সেখানে লক্ষ্মণবাবু পুলিশ ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। পাশাপাশি, বলেন, ‘‘তিন দিনের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার না করা হলে শিল্পাঞ্চল জুড়ে আন্দোলন হবে।’’ তবে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির বিরুদ্ধে অনুষ্ঠান আয়োজনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রবাবু। অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি।
বিজেপির ওই মিছিলে স্লোগান দেওয়া এবং বক্তব্য রাখার সময়ে লাউডস্পিকার ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। তবে লক্ষ্মণবাবুর বক্তব্য, ‘‘রবিবার কোনও পরীক্ষা না থাকায় আমাদের বার্তা পৌঁছে দিতে লাউডস্পিকার ব্যবহার করা হয়। তবে এটাও ঠিক হয়নি। আমরা দুর্গাপুরবাসীর কাছে সে জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’’
পাশাপাশি, যে সংগঠনের অনুষ্ঠানের আয়োজন ঘিরে অশান্তি তৈরি হয়েছিল, এ দিন সেই অনুষ্ঠান হয়। সেখানেও উচ্চস্বরে বড় বড় সাউন্ডবক্সের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এলাকায়। তবে বিষয়টি নিয়ে সেখানে উপস্থিত তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশিকা মেনে আশপাশ ঘিরে সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা হয়েছে।’’
তবে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, পরীক্ষার তিন দিন আগে থেকে কোথাও খোলা জায়গায় মাইক, সাউন্ডবক্স বাজানো নিষিদ্ধ। পরীক্ষা-মরসুমে মাইক ও সাউন্ডবক্স ব্যবহার করতে গেলে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। মাইক্রোফোনে ‘সাউন্ড লিমিটার’ লাগাতেই হবে। উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্স বাজানো নিষিদ্ধ। স্কুলের একশো মিটারের মধ্যে জায়গা
‘নো সাউন্ড জ়োন’।