রামমন্দিরের ভূমিপুজো উপলক্ষে আয়োজন। উপরে, কালনার জিউধারায় এবং নীচে বাঁ দিকে, কাটোয়ায় ও ডান দিকে, মন্তেশ্বরের বুধপুরে। নিজস্ব চিত্র
অযোধ্যায় রামন্দিরের ভূমিপুজোর দিনে জেলার গ্রামে-গ্রামে হনুমান মন্দির এমনকি, শনি মন্দিরেও রামচন্দ্রের পুজো হল। শঙ্খধ্বনি, লাড্ডু বিলির সঙ্গে কোথাও কোথাও পদযাত্রা করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। রাজ্য জোড়া ‘লকডাউন’-এর দিনে পথে নেমে মিছিল করায় কাটোয়ায় ২৩ জনকে আটক করে পুলিশ। বর্ধমানেও দু’-একটি জায়গায় পুলিশ গিয়ে সতর্ক করে। বিজেপি নেতাদের অবশ্য দাবি, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে ছোট ছোট অনুষ্ঠান করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই পানুহাটের বেশ কিছু জায়গায় গেরুয়া পতাকা বাঁধা হয়। বুধবার সকালেই ‘ভূমি পুজো অযোধ্যায় শঙ্খ বাজছে বাংলায়’ স্লোগান তুলে কাটোয়ার পানুহাটে পথে নামেন বেশ কিছু বিজেপি কর্মী। রামচন্দ্রের ছবি, দলীয় পতাকা ছিল সঙ্গে। কিছু জায়গায় গেরুয়া আবিরও খেলা হয়। পুলিশ গিয়ে জেলা বিজেপির মহিলা মোর্চার সম্পাদক সীমা ভট্টাচার্য-সহ ১৩ জনকে আটক করে। পরে শহরের নানা প্রান্ত থেকে আরও দশ জনকে আটক করা হয়।
জেলা (কাটোয়া) বিজেপির সহ সভাপতি অনিল দত্তের দাবি, “আমাদের কর্মীরা লকডাউনকে মান্যতা দিয়েই স্বাস্থ্য-বিধি মেনে অযোধ্যায় ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের মন্দিরের ভূমিপুজো উপলক্ষে শঙ্খ বাজানো ও যজ্ঞানুষ্ঠান করেছেন। কিন্তু শাসকদলের ইশারায় পুলিশ আমাদের বেশ কিছু কর্মীকে আটক করেছে।’’ যদিও তৃণমূলের কোনও নেতা এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। অভিযোগ মানেনি পুলিশও। মঙ্গলকোটের চানক, ইট্টা, শিমুলিয়া, কৈচর, কেতুগ্রামেও নানা অনুষ্ঠান হয়।
বর্ধমানের ইছলাবাদেও পুলিশ বিজেপির মিছিল আটকে দেয় বলে অভিযোগ। তবে কথা কাটাকাটির বেশি কিছু হয়নি। লোকো এলাকার খালাসিপাড়ার একটি বাড়িতেও পুজো চলাকালীন স্থানীয় তৃণমূলের লোকজন জড়ো হন বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে সরিয়ে দেয় তাঁদের। কল্পতরু মন্দির, উদয়পল্লিতেও পুজো হয়। তবে কোনও অশান্তি হয়নি। বর্ধমান ২ ব্লকের পুতুণ্ডা রঘুনাথ মন্দির, ভাতার মহাপ্রভু তলায় সঙ্ঘ পরিবারের তরফে পুজো হয়। মন্তেশ্বরে বিজেপির চারটি মণ্ডলের তরফে বুধপুর, করন্দা, রাজগাছি মামুদপুর ও বন্ধুপুরে ছোট করে পুজো ও লাড্ডু বিলি করা হয়।
আউশগ্রামের এড়াল গ্রামে রামচন্দ্রের ছবি নিয়ে শোভাযাত্রা ও হরিনাম সংকীর্তন করেন একাংশ বিজেপি সমর্থক। মহিলার শঙ্খধ্বনি করেন। গুসকরার আলুটিয়ায় রামমন্দিরে প্রদীপ জ্বালানোর পাশাপাশি টিভিতে অযোধ্যার অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। আউশগ্রামের বাবুইশোল গ্রামে আবার ‘লকডাউন’ ও স্বাস্থ্যবি-ধি না মেনেই জমায়েত হয় বলে অভিযোগ। যদিও বিজেপি নেতাদের দাবি, কোথাও ২০-২৫ জনের বেশি জমা হননি। জেলা (বর্ধমান সদর) বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি সন্দীপ নন্দীরও দাবি, ‘‘বাড়িতে বা মন্দিরে পুজো হয়েছে। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি ভাঙা হয়নি।’’
আগের দিন দুপুর থেকে গেরুয়া পতাকা লাগানো শুরু হয় কালনা শহরেও। এ দিন যোগীপাড়ায় ধুমধাম করে পুজো হয়। আয়োজকদের দাবি, ‘মাস্ক’ পরেই অনুষ্ঠান হয়েছে। কালনা ২ ব্লকের কল্যাণপুর পঞ্চায়েত এলাকার বিজেপি নেতাকর্মীরা জিউধারা এলাকায় পুজো, লাড্ডু বিলি করেন। প্রথমে মাইক ব্যবহার করা হলেও পুলিশের আপত্তিতে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পূর্বস্থলীর মধুপুরে বহু লোকের জমায়েত হয় বলে অভিযোগ।