জামালপুরে সৌমিত্র। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের ‘শস্যগোলা’য় কৃষকেরা দুর্দশায় রয়েছেন, দাবি করলেন বিজেপির যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। বুধবার সন্ধ্যায় জামালপুরের চকদিঘিতে বিজেপি যুব মোর্চার সভায় যোগ দিয়ে তিনি পূর্ব বর্ধমানের ‘গরিমা’ ফেরানোর দাবিতেও সরব হন। তৃণমূলের দাবি, সভায় একদম ভিড় হয়নি। তা অস্বীকার করে বিজেপির পাল্টা দাবি, সকাল থেকে মোড়ে-মোড়ে ‘পাহারা’ বসিয়েও তৃণমূল সভায় ভিড় আটকাতে পারেনি।
সভায় বিজেপি সাংসদ দাবি করেন, ‘‘বর্ধমান জেলা ভাগ করেছে তৃণমূলের সরকার। পূর্ব বর্ধমানকে কিছুই দেয়নি। বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর জন্মস্থানের জেলাকে গরিমাহীন করে তুলছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মন্ত্রিসভার দিকে তাকালেই পূর্ব বর্ধমান জেলা কতটা গরিমাহীন, তা বোঝা যায়। রাজ্যের মন্ত্রিসভায় এই জেলা থেকে একটাও ভাল দফতরের মন্ত্রী নেই। এক জন মন্ত্রী আছেন, তবে তাঁর কোনও কাজ নেই!’’ কৃষি-প্রধান এই জেলায় কৃষকেরা ‘দুর্দশা’র মধ্যে রয়েছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার শস্যগোলা পরিচিত জেলাকে আলু চাষের জন্য পঞ্জাব থেকে বীজ আনতে হচ্ছে। সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন না চাষিরা!’’
এ ছাড়াও বাসিন্দারা কেন্দ্রের ‘কিসান নিধি সম্মান প্রকল্প’, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন সৌমিত্র। শ্রমিকেরা কেন ভিন্ রাজ্যে কাজের খোঁজে যাচ্ছেন, সে প্রশ্নও তোলেন। দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘ভয় পেলে হবে না। লড়াই করতে হবে। আমার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা করেছে। কিন্তু আমাকে দমানো যায়নি।’’ বিজেপির জামালপুর বিধানসভার আহ্বায়ক জিতেন ডোকালের দাবি, ‘‘একটি মাত্র মণ্ডলের লোক ছিলেন সভায়। বিধানসভার কর্মসূচি হলে মাঠ উপচে পড়ত।’’
রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। বিজেপির এই সভায় লোক হয়নি দাবি করে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তথা জামালপুরের প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের মন্ত্রীরা সারা দিনই উন্নয়নের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। জামালপুরের মাটিতে বিজেপির ঠাঁই নেই, তা এই সভা প্রমাণ করে দিল। কারা গরিমা নষ্ট করছে, কারা কৃষকদের দুর্দশায় ফেলছে, তা মানুষ প্রতিদিন নিজেদের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারছেন।’’ সভার পথে লোক আটকানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।