এই বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পালিতপুরে। নিজস্ব চিত্র।
পানীয় জল নেওয়া নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ হল বর্ধমানের পালিতপুর গ্রামে। বুধবার রাতে এই ঘটনায় জখম দু’পক্ষের চার জনের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পুলিশ চার বিজেপি সমর্থক ও এক তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হলে ১৭ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জল নেওয়া নিয়ে পালিতপুরের উত্তরপাড়ায় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ, তা থেকে হাতাহাতি হয়। বিজেপির অভিযোগ, এই ঘটনার পরে, তাঁদের প্রবীণ সমর্থক নীলরতন মুখোপাধ্যায় বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁকে রাস্তায় একা পেয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই খবর পেয়ে বিজেপির লোকজন জড়ো হয়ে রাস্তার পাশে দু’টি দোকানে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।
তৃণমূল সমর্থক বাপন রানা বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন, পালিতপুর ও মির্জাপুরের এক দল দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়। তারা টাঙি নিয়ে চড়াও হলে তিনি আহত হন। তাঁর চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে এলে তাঁদেরও কাটারি নিয়ে আক্রমণ করে দুষ্কৃতীরা। পালানোর সময়ে কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর-লুটপাট চালায় তারা। তৃণমূল সমর্থক প্রদীপ রানার অভিযোগ, ‘‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে দূরে বসেছিলাম। বিজেপির কয়েকজন মহিলা কর্মী বঁটি এনে হামলা চালায়।’’ এক তৃণমূল সমর্থককে আটকানো হলে তিনি মোটরবাইক ফেলে খেত জমি ধরে পালিয়ে যান বলেও অভিযোগ।
বিজেপির তরফে পলাশ মুখোপাধ্যায় পাল্টা অভিযোগ করেছেন, তাঁর বাবাকে রাস্তায় একা পেয়ে মারধর করা হয়েছে, টাকা-মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে। রাতে বর্ধমান থানার পুলিশ এলাকায় গিয়ে তল্লাশি চালায়। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জনকে ধরা হয়েছে। ধৃত গৌতম ঢাক, সন্তোষ হাজরা, শৈলেন ঢাক ও তাত্ত্বিক সিদ্ধান্ত বিজেপি সমর্থক এবং জয়ন্ত খাঁ তৃণমূলের সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত।
বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক (বর্ধমান সদর) সুনীল গুপ্তের অভিযোগ, ‘‘কয়েকদিন আগে দলের পতাকা খোলা নিয়ে অশান্তি হয়। সে জন্য বিজেপি সমর্থকদের পানীয় জল দেওয়া হবে না বলে ফতেয়া জারি করেছিল তৃণমূল। তার প্রতিবাদ করার জন্যই প্রথমে গ্রামে মারপিট হয়। পরে আমাদের এক সমর্থককে মারধর করেছে তৃণমূল।’’ তা অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা কমিটির অন্যতম কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বল প্রামাণিক দাবি করেন, ‘‘নর্দমা তৈরি নিয়ে গ্রামীণ বিবাদকে নিয়ে বিজেপি রাজনীতি শুরু করে। প্রতিবাদ করায় বহিরাগতদের নিয়ে এসে হামলা চালায় ওরা। দোকান-মোটরবাইক ভাঙচুর করেছে।’’