আসানসোলে খাদ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
খনি-শিল্পাঞ্চলকে নতুন জেলা করার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। সে দিকে নজর রেখে এই অঞ্চলে খাদ্য দফতরের পরিকাঠামো ঢেলে সাজার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। শনিবার আসানসোলে এসে তার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আসানসোল জেলা হতে চলেছে। তাই খাদ্য দফতরের তরফে শহরে একাধিক জনমুখি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নাগরিকেরা যেন কোনও ভাবে বঞ্চিত না হন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তা কঠোর ভাবে দেখা হচ্ছে।’’ জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, আসানসোল মহকুমায় প্রতি মাসে পাঁচশো মেট্রিক টন খাদ্যশস্য প্রয়োজন। শহরে এখন ৬০০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুতের মতো গুদাম আছে। কিন্তু সরকারের লক্ষ্য, অন্তত চার মাসের শস্য এক সঙ্গে মজুত রাখতে হবে। তাই আসানসোলে দু’হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুতের মতো গুদাম তৈরি করা হবে। দফতরের যে অফিসগুলি রয়েছে সেগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নেও নজর দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, এখানে জয়েন্ট ডিরেক্টর ও ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলারের কার্যালয় তৈরি হচ্ছে।
বিধানসভা ভোটের জন্য মাঝে গ্রাহকদের ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। খাদ্যমন্ত্রী জানান, ভোটের আগে পর্যন্ত এই শহরের প্রায় আড়াই লক্ষ গ্রাহককে ওই কার্ড দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। আরও প্রায় এক লক্ষ ৭০ হাজার গ্রাহক তা পাবেন। সোমবার থেকে তা বিতরণ হবে। পুরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে শিবির করে কার্ড দেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির তত্ত্বাবধানে এই কার্ড বিতরণের প্রক্রিয়া চলবে।’’ মন্ত্রীর আশ্বাস, কোনও গ্রাহকের কার্ডে ভুল থাকলে তিনি শিবিরে দাঁড়িয়েই ৪, ৫, ৬ নম্বর ফর্ম পূরণ করে দেবেন। ১৫ দিনের মধ্যে ভুল সংশোধন করে নতুন কার্ড পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ৩১ অগস্টের মধ্যে কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলা হবে বলে তাঁর দাবি। মন্ত্রী জানান, দু’টাকার খাদ্যশস্য পাওয়ার অধিকারী নন অথচ কম দামে রেশন পেতে চান, এই রকম গ্রাহকেরা আবেদন করলে তাঁদের সামান্য বেশি দামে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করছে খাদ্য দফতর।
শহরের নানা অঞ্চলে কিছু রেশন ডিলার নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ করছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ওই সব ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আমরা ইতিমধ্যে কয়েক জনকে চিহ্নিত করেছি।’’ জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, আসানসোলে আরও অন্তত তিরিশটি ডিলার নিয়োগ হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিকে, বিশেষত মহিলা পরিচালিত গোষ্ঠীগুলিকে বেশি করে এই ব্যবস্থায় আনার উদ্যোগ চলছে।