কাঁকসায় ‘হামলা’। নিজস্ব চিত্র
ভোট মিটে যাওয়ার পরেও অশান্তির অভিযোগ উঠল জেলার নানা প্রান্তে। বিরোধী দলের প্রার্থী ও কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠল কাঁকসায়। জামুড়িয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে কর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
কাঁকসায় মঙ্গলবার বিজেপির জেলা পরিষদ সদস্য তথা শিক্ষককে স্কুলে ঢুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে গামছায় মুখ ঢাকা এক দল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। শিক্ষক বিকাশ বিশ্বাস মহকুমাশাসকের কাছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। তৃণমূল যদিও ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগের কথা মানতে চায়নি।
সোমবার রাতে কাঁকসার রাজকুসুম গ্রামে সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএম প্রার্থী সুজয় মুখোপাধ্যায় দুর্গাপুরে মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘পুলিশকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির ১৭ নম্বর আসনে প্রার্থী হয়েছেন সুজয়বাবু। তাঁর অভিযোগ, ভোট ঘোষণার পর থেকেই নানা ভাবে তাঁকে চাপ দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার বুথের ভিতরে টেবিলে আগ্নেয়াস্ত্র রেখে ভোট করাতে চেয়েছিল শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। আমি প্রতিবাদ করায় প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। এর পরে রাতে আমার বাড়িতে হামলা হয়। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’
লিখিত অভিযোগে সুজয়বাবু জানান, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ৩০-৩৫ জন দুষ্কৃতী বাড়িতে চড়াও হয়। তাঁরা লুকিয়ে পড়েন। দুষ্কৃতীরা তাঁর ও দাদার বাড়ির একটি ঘরে ভাঙচুর করে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘যাওয়ার আগে দুষ্কৃতীরা ফের হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে গিয়েছে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। পুলিশে খবর দিয়েও লাভ হয়নি।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারেরও অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা কার্যত জঙ্গল-রাজ চালাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন নির্বিকার।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজয়বাবু ছাড়াও কাঁকসার বিহারপুরের সিপিএমের পোলিং এজেন্ট সন্ন্যাসী বাউড়িও একই রকম অভিযোগ করেছেন। পুলিশকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানোর জন্য পুলিশকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘দলের কেউ এই সব ঘটনায় জড়িত নয়। পুলিশ তদন্ত করুক।’’
জামুড়িয়ায় দলের কর্মীদের পুলিশ বিনা কারণে হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ বিজেপি-র। দলের নেতা সন্তোষ সিংহের অভিযোগ, ‘‘হিজলগড়া পঞ্চায়েতের সাকরি-কুমারিডিহিতে আমাদের কোনও প্রার্থী ছিল না। নির্বাচন চলাকালীন শাসক গোষ্ঠী বোমোবাজি করে। তার পরে রাতে পুলিশ চার জন বিজেপি কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয়। তাঁদের নামে পুলিশের গাড়িতে বোমা মারার অভিযোগ আছে জানিয়ে থানায় দেখা করতে বলা হয়েছে।’’ পুলিশ অবশ্য কোনও হেনস্থার কথা মানতে চায়নি।