হাসপাতালে চিকিৎসা করলেন কিছু জুনিয়র

রবিবার সকালে এক জুনিয়র চিকিৎসকের এমন ‘কর্তব্যের কথা’য় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ’কে শোনাচ্ছিলেন সংশ্লিষ্ট সিনিয়র চিকিৎসক। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “জুনিয়র ডাক্তারেরা আমাদের সাহায্য করতে শুরু করেছে।’’

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯ ০০:০৪
Share:

রোগী দেখছেন জুনিয়র ডাক্তার। নিজস্ব চিত্র

রাধারানি ওয়ার্ডে এক জন রোগীর পড়ে গিয়ে মাথা ফেটেছে। রক্ত থামাতে পারছেন না নার্সরা। খবর পেয়ে এলেন একজন জুনিয়র চিকিৎসক (পিজিটি)। সেখান থেকে ফিরে এসে জরুরি বিভাগে থাকা সিনিয়র ডাক্তারকে বললেন, ‘‘স্যার, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তুলেছি।’’

Advertisement

রবিবার সকালে এক জুনিয়র চিকিৎসকের এমন ‘কর্তব্যের কথা’ই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ’কে শোনাচ্ছিলেন সংশ্লিষ্ট সিনিয়র চিকিৎসক। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “জুনিয়র ডাক্তারেরা আমাদের সাহায্য করতে শুরু করেছে।’’

এর মধ্যেই গলসির রামনগরের পাঁচ বছরের শিশু সুমাইয়া খাতুনকে রক্তাক্ত অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। তার চোখের উপরে কেটে গিয়ে রক্ত ঝরছে। জানা গিয়েছে, মোটরবাইকের ধাক্কায় ওই শিশুটি জখম হয়েছে। শিশুটিকে দেখতে ছুটে আসেন জুনিয়র চিকিৎসক ঋতরষি নাথ। তিনিই প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে শিশুটিকে চক্ষু বিভাগে পাঠান। হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ-ও শিশুটির চিকিৎসা-সংক্রান্ত পরামর্শ দেন ওই জুনিয়র চিকিৎসককে। ছুটির দিনে সিনিয়রদের সাহায্য করার জন্য সুপার অনুরোধও জানান। ওই জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, “বিবেকের কাজ করেছি। মুর্মূষু রোগীকে সাহায্য করা আমাদের কর্তব্য।’’ পাশেই জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্না মঞ্চ থেকে তখন ভেসে আসছিল, “রোগীরা আমাদের পাশে থাকুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে সবসময় থাকব!’’

Advertisement

আন্দোলনকারীদের একাংশের দাবি, শনিবার রাত থেকেই জুনিয়র ডাক্তারেরা ‘হাত বাড়িয়ে’ দিতে শুরু করেছেন। জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন, এমন এক রোগীর অস্ত্রোপচারও তাঁরা করেছেন। ওই রোগী এখন হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ দিন সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সিনিয়রদের সঙ্গে এক জন জুনিয়র চিকিৎসক জরুরি বিভাগে বসে। তিনি রোগী দেখে প্রেসস্ক্রিপশন লিখছেন। কোথায় গেলে ওষুধ মিলবে, তা-ও জানান। ঋষি ব্রহ্ম নামে ওই জুনিয়র চিকিৎসক সাপে কাটা এক রোগীর চিকিৎসা করার ফাঁকে বললেন, “আন্দোলনে সবসময় রয়েছি। এখন রোগীদের সাহায্য করছি।’’ কাটোয়ার গোপখাঁজি গ্রামের অম্বিকা মণ্ডলকে শনিবার গভীর রাতে বাড়িতেই সাপে কাটে। তাঁর সঙ্গে থাকা কাকলি মণ্ডল বলেন, “কাটোয়া থেকে রেফার করেছিল এই হাসপাতালে। ভেবেছিলাম কোনও চিকিৎসা মিলবে না। শেষমেশ জুনিয়র ডাক্তারেরাই মেয়েকে সুস্থ করেছেন।’’

হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “আমরা জরুরি বিভাগে রোগীদের সাহায্য করার জন্যে আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনে সাড়া দেওয়ার জন্যে আমার ছাত্রদের অভিনন্দন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement