পেঁপের কালো বীজ থেকে এডিসের লার্ভা মারার উপায়। —নিজস্ব চিত্র।
ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার হিমশিম খাচ্ছে। এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে নানা উপায় নেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যেই পাকা পেঁপের কালো বীজ থেকে এডিসের লার্ভা মারার উপায় বার করলেন বিজ্ঞানীরা। কেন্দ্র সরকারের ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অফ ইন্ডিয়ার’ কাছ থেকে গত সপ্তাহে মেধাসত্ত্ব বা পেটেন্টের শংসাপত্র পেয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও বাঁকুড়ার খ্রিস্টান কলেজ। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য গৌতম চন্দ্রের দাবি, “এই প্রথম বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে নামে কোনও পেটেন্ট পাওয়া গেল। ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে পেটেন্টটি গ্রাহ্য করছে কেন্দ্রীয় ওই সংস্থা। এরাই বিভিন্ন দ্রব্যের জিআই তকমা দেয়।’’
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক, বর্তমানে অস্থায়ী উপাচার্য গৌতম চন্দ্র, তাঁর ছাত্র, বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের শিক্ষক অনুপম ঘোষ ও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অঞ্জলি রাওয়ানি ডেঙ্গি-মশা নিধনে পরিবেশ-সহায়ক কিছু আবিষ্কার করা যায় কি না, সে ব্যাপারে গবেষণা শুরু করেন। এর আগে গৌতমবাবু মেহগনি ও পুত্রাঞ্জিবা গাছের রস থেকে পরিবেশবান্ধব তেল তৈরির গবেষণা করেছেন। পুত্রঞ্জিবার গবেষণাপত্র ‘স্প্রিংগার নেচার গ্রুপে’র একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, নোনা আতা, বুনো কয়েতবেল থেকে তৈরি তেলও মশা নিধনে কার্যকর। কিন্তু তাঁরা চাইছিলেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-এর নির্দেশিকা মেনে পরিবেশ-সহায়ক ও লার্ভা ফোটার আগেই মশা নিধন করতে।
উপাচার্য বলেন, “পাকা পেঁপের কালো বীজের নির্যাসকে বীজারক হিসাবে (ফাইটো-কেমিক্যাল কন্ট্রোল) ন্যানো-টেকনোলজির সাহায্যে ‘সিলভার ন্যানো পার্টিকেল’ বার করা হয়েছিল।” বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের শিক্ষক অনুপম ঘোষ বলেন, “গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওই ক্ষুদ্র কণা সহজেই মশার লার্ভার ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লার্ভা মেরে ফেলছে। আমরা পাউডার করে গবেষণাগারে দেখেছি, মশার জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে।”
অনুপমবাবু বলেন, “সাধারণত কোনও গবেষকের নামে পেটেন্ট দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা ঠিক করি, আমাদের প্রতিষ্ঠানের নামে পেটেন্ট নেওয়া হবে।” ২০১৪ সালে পেটেন্টের জন্য আবেদন করা হয়। গত সপ্তাহে মেলে শংসাপত্র। তবে পেটেন্টটি কার্যকরীহচ্ছে ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে। গৌতমবাবু বলেন, “পেটেন্ট পাওয়ার জন্য যাবতীয় খরচ কেন্দ্রীয় সরকারের একটি
সংস্থা করেছে।”