অপেক্ষাই সার। নিজস্ব চিত্র।
এলাকার সব ক’টি চাপাকলই বেহাল। তাই গরম পড়তেই প্রায় কিলোমিটার তিনেক উজিয়ে সাইকেলে বালতি চাপিয়ে জল আনতে হয়। কোথাও বা আবার পাইপলাইন ফুটো করে জলচুরির ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ। এর জেরে সমস্যায় পড়েছেন বারাবনির কন্যাপুর, তেঁতুলিয়া এলাকায় বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দারা। সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য কারগরি দফতরে একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন বাসিন্দারা।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় শ’পাঁচেক বাসিন্দার বাস। কন্যাপুর, তেঁতুলিয়া, বাউড়িপাড়া, ব্রাহ্মণপাড়া অঞ্চলে জলকষ্ট চরমে পৌঁছেছে। গোটা অঞ্চলে মাত্র খান তিনেক চাপাকল রয়েছে। কিন্তু সেগুলি থেকে নামমাত্র জল পড়ে বলে জানালেন বাসিন্দারা। এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরেরও ৩টি কল থাকলেও কোনওটি থেকেই জল পড়ে না। স্থানীয় বাসিন্দা অরুণ তিওয়ারি বলেন, ‘‘একমাত্র বর্ষার সময় মাস তিনেক ঠিকঠাক জন মেলে। বছরের বাকি সময়ে দিনে দু’বালতি পানীয় জল জোগাড় করতে নাভিশ্বাস ওঠে।’’ গ্রামে পাইপ লাইন থাকলেও তা থেকে জল মেলে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এই পরিস্থিতিতে এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরের এথোড়া গ্রামের উচ্চ জলাধারের সামনে থেকে জল বয়ে আনতে হয়। কাকভোরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গল, বেশ কয়েকজন যুবক সাইকেলে বালতি ঝুলিয়ে জল আনতে যাচ্ছেন।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে এক আধিকারিক জানালেন, ওই এলাকার পাইপ লাইনে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বেশ কয়েকটি জায়গায় পাইপ লাইন ফুটো করে জল চুরির ঘটনা ঘটছে। এর জেরেই কন্যাপুর, তেঁতুলিয়ার মতো এলাকাগুলিতে জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘একাধিক ইটভাটা মালিক পাইপলাইন ফুটো করে পাম্প লাগিয়ে জল টেনে নিচ্ছেন। সমস্যা সমাধানের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আর্জি জানানো হলেও কোনও ফল মেলেনি।’’ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক স্বীকার করেন, দফতরের গাফিলতির জন্যই জল চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের তরফে একটি পৃথক পাইপ লাইন বসানোর আবেদন করা হয়েছে।
গোটা বিষয়টি শুনে আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাসের আশ্বাস, ‘‘সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে আশ্বাস থাকলেও সমস্যা কতখানি মিটবে তা নিয়ে সংশয়ে বাসিন্দারা।