বেহাল দুর্গাপুর ব্যারাজের সেতুর রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুর ব্যারাজের উপরের রাস্তা আংশিক বেহাল। তৈরি হয়েছে খন্দ। দ্রুত সারাই না করা হলে খন্দের আকার বাড়বে। আর সেটা হলে ব্যারাজের উপরে চাপ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা চালকদের। সেচ দফতর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে।
১৯৫৫-য় তৈরি হয় দুর্গাপুরের ডিভিসি ব্যারাজ। ব্যারাজ গড়ে ওঠায় দুর্গাপুর ও বাঁকুড়ার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ গড়ে ওঠে। তা ছাড়া, ব্যারাজের উপর দিয়েই গিয়েছে ৯ নম্বর রাজ্য সড়ক। দুর্গাপুরের মুচিপাড়া থেকে ওড়িশায় নয়াগ্রাম গিয়েছে সেই রাস্তা। তাই এই
রাস্তা দিয়ে দুর্গাপুরের সঙ্গে যেমন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুরের যোগাযোগ তৈরি হয়েছে, তেমনই উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের মধ্যেও যোগাযোগের অন্যতম প্রধান রাস্তা এটি। তা ছাড়া, বড়জোড়া শিল্পতালুকের সঙ্গে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের যোগাযোগ রক্ষা হয় এই সড়ক দিয়েই। ফলে, এই রাস্তা দিয়ে কারখানার ভারী ট্রাক, যাত্রিবাহী বাস, মিনিবাস, ভ্যান, অন্য যানবাহন, মোটরবাইক চলাচল করে।
কিন্তু গাড়ি চালকেরা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুর থেকে ব্যারাজে ওঠার মুখে সড়কের বেশ কিছুটা অংশ বেহাল হয়ে পড়েছিল। কিছু দিন আগে তা সংস্কার করা হয়। কিন্তু ফের তা বেহাল বলে অভিযোগ। তাঁদের আরও অভিযোগ, ব্যারাজের উপরের রাস্তাও নানা স্থানে বেহাল। পিচ উঠে তৈরি হয়েছে খন্দ। বেরিয়ে পড়েছে ভিতরের কংক্রিট মেঝে। ব্যারাজ দিয়ে দুর্গাপুর থেকে বেলিয়াতোড়ে নিত্য মোটরবাইক নিয়ে যাতায়াত করেন
সুস্মিত মণ্ডল। তাঁর কথায়, “কিছু দিন ধরে দেখছি, ব্যারাজের উপরে কোথাও রাস্তার মাঝে, কোথাও রাস্তার ধারে খন্দ তৈরি হয়েছে। ফলে, যানবাহনের গতি কমে যাচ্ছে ব্যারাজের উপরে। রাতের দিকে যানজটও হচ্ছে। দ্রুত রাস্তা না সারানো হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।” ট্রাক চালক বুদ্ধদেব রায়ও সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বলেন, “ব্যারাজের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় সন্তর্পণে যাতায়াত করতে হয়। তা না হলে গাড়ির যন্ত্রাংশের ক্ষতি হতে পারে।” বাসে ব্যারাজ দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের মনোজ দে। তিনিও জানান, কিছু দিন ধরেই ব্যারাজের উপরের রাস্তা বেহাল। মাঝে-মাঝে তাপ্পি দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই তা উঠে যায়। আমূল সংস্কার জরুরি।
এ দিকে, ইঞ্জিনিয়ারদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, ব্যারাজের বয়স বাড়ছে। ব্যারাজের রাস্তা ঝকঝকে থাকলে সাবলীল গতিতে যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু তা না হলে, যানবাহনের গতি কমে যায়। ফলে, ব্যারাজের উপরে দীর্ঘক্ষণ যানবাহন রয়ে যায়। তা ছাড়া, যানবাহনের চাকা খন্দে পড়লেও অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয় ব্যারাজের উপরে। ব্যারাজের উপর দিয়ে নিয়মিত শিল্পতালুকের ভারী ডাম্পার, ট্রাক চলাচল করে।
তাই ব্যারাজের রাস্তা যাতে সব সময় ঠিক থাকাটা দরকার।
সেচ দফতরের দামোদর হেড ওয়ার্কস ডিভিশনের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার বলেন, “ব্যারাজের উপরের রাস্তার আমূল সংস্কারের প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে। ৩৪টি গেটের সংযোগের জায়গাগুলিও বদলে ফেলা হবে। অর্ধেক অংশে যান চলাচল বন্ধ রেখে ধাপে-ধাপে কাজ করতে হবে।”