সাংসদ তহবিল থেকে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য অনুদান দেওযার ব্যাপারে কোনও কার্পণ্য হয়নি। কিন্তু জেলা প্রশাসনের একাংশের অসহযোগিতায় অনেক কাজই ঠিক মতো এগোচ্ছে না বলে অভিযোগ আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের বক্তব্য, ‘‘সাংসদ তহবিল থেকে অনুমোদন এলেই কাজ শুরুর ব্যবস্থা হয়। তবে সে জন্য কিছু প্রশাসনিক পদক্ষেপ করতে সময় লাগে।’’
এলাকার উন্নয়নের প্রশ্নে জেলা প্রশাসনের একাংশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এর আগেও জানিয়েছেন বাবুল। কখনও সাংসদ তহবিলের টাকা ঠিক মতো খরচ না করা, আবার কখনও উন্নয়নমূলক কাজের দেখভাল না করার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি কাজের জন্য দেওয়া অর্থিক অনুমোদনের তালিকা প্রকাশ করে আসানসোলের সাংসদ বলেন, ‘‘আমার তহবিলের টাকায় এই সব কাজ করাতে প্রশাসনের এত অনীহা কেন, বুঝতে পারছি না! উন্নয়নের কাজে কোনও রং দেখে করা ঠিক নয়।’’
বাবুল জানান, শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় গেলে এলাকার সাধারণ মানুষজন তাঁর কাছে জনবহুল অঞ্চলগুলিতে বাসযাত্রীদের জন্য ছাউনি তৈরি করে দেওয়ার আবেদন করেছেন। যেমন, জিটি রোডের উপরে অন্ডাল মোড়, বারাবনির দোমহানি বাজার এলাকা, জামুড়িয়ার চাকদোলা মোড়, কুলটির বরাকর, পাণ্ডবেশ্বরের ফুলবাগান মোড়, রানিগঞ্জের স্টেশন বাসস্ট্যান্ড ও সালানপুরের রূপনারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ড। বাবুল বলেন, ‘‘এই সাতটি যাত্রী-ছাউনি তৈরির জন্য গত বছর অগস্টে মোট ৩৫ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছি। কিন্তু প্রশাসনের তরফে এখনও সেগুলি নির্মাণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়নি।’’
এখানেই শেষ নয়। সাংসদ জানান, উখড়ায় একটি রাস্তা তৈরির জন্য ১০ লক্ষ, আসানসোলের গিরমিট এলাকার একটি রাস্তার জন্য ৬০ লক্ষ, হিরাপুরের মানিকচাঁদ পল্লি এলাকার একটি রাস্তার জন্য ৪ লক্ষ, সূর্যনগরের একটি রাস্তার জন্য ৩০ লক্ষ, কুলটির সাতাসার কাছে জিটি রোড থেকে বড়ধেমোর রাস্তার জন্য ১১ লক্ষ, বেজডির একটি রাস্তার জন্য ১৪ লক্ষ, পাটমোহনার একটি রাস্তার জন্য ১১ লক্ষ, পাণ্ডবেশ্বরের শঙ্করপুরে মাঝিপাড়ার একটি রাস্তার জন্য ১৫ লক্ষ টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে। অন্তত মাস ছ’য়েক আগে এই কাজগুলির জন্য টাকা পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। সাংসদের কথায়, ‘‘এই কাজগুলি সম্পন্ন করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। ফলে, সমস্যা ভোগ করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষজন।’’
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন অবশ্য কাজ না হওয়ার কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ কথা ঠিক নয়। অনুমোদন এলেই কাজ শুরুর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হয়।’’ তাঁর দাবি, সাংসদের তহবিল থেকে খরচের বহরে রাজ্যে এগিয়ে রয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। কাজ আটকে থাকলে যা সম্ভব হত না। কাজ হচ্ছে বলেই তিনি আরও টাকা অনুমোদন করতে পারছেন। তা থেকেই স্পষ্ট, প্রশাসনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক নয়।