সপ্তাহ ঘুরলেই ভাগ হবে জেলা। নতুন জেলা পাবে আসানসোল-দুর্গাপুর। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলা সদর হতে চলেছে আসানসোল। তা জেনে খানিক হতাশ দুর্গাপুরের বাসিন্দারা। তবে তার মধ্যেই শহরের মানুষের জন্য ভাল খবর, মহকুমা প্রশাসনের জন্য মিলছে নতুন ভবন। প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকায় নতুন এই ভবন তৈরি হবে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে। সে জন্য রাজ্য টাকা বরাদ্দও করেছে। দ্রুত ভবন তৈরি শুরু হয়ে যাবে বলে আশা মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরার।
নিজস্ব বাড়ি নেই। এডিডিএ-র চার তলা ভবনের কয়েকটি ঘর ভাড়া নিয়ে বছরের পর বছর চলছে দুর্গাপুরের মহকুমা প্রশাসনের কাজ। কোথাও জানলার কাচ ভাঙা, কোনও দেওয়াল থেকে খসে পড়েছে পলেস্তরা। আশপাশ দুর্গন্ধ ও আবর্জনায় ভরা। অবাধে চলছে বেআইনি গাড়ি পার্কিং। দীর্ঘদিন ধরে এমনই ছবি দেখা যায় সেখানে।
ওই একই ভবনে রয়েছে আদালত, পরিবহণ দফতর, ডাকঘর-সহ নানা অফিস। প্রতি দিন সেখানে নানা কাজে আসেন কয়েক হাজার মানুষ। দোতলায় আদালত চলে। সব সময় ভিড় লেগে থাকে। তা পেরিয়ে তিন তলায় মহকুমাশাসকের অফিসে যেতে হয়। পুরনো ভবনে লিফটের ব্যবস্থা নেই। সিঁড়িতে পর্যাপ্ত আলো নেই, অপরিষ্কারও। এ সব ছাড়াও রয়েছে গাড়ি রাখার সমস্যা। কাজের সময়ে ভবনের সামনে-পিছনে, সর্বত্র সার দিয়ে মোটরবাইক, গাড়ি দাঁড় করানো থাকে। ফলে, যাতায়াতে সমস্যা হয়। অনেক সময়ে যানবাহনের চাপে চলা দায় হয়ে দাঁড়ায়।
গত কয়েক বছরে এই শহরের অবয়ব অনেক পাল্টেছে। বাম আমলে বেশ কিছু কল-কারখানা গড়ে ওঠার পরে শহরে শপিংমল, মাল্টিপ্লেক্স, বড় হোটেল, দেশি-বিদেশি সংস্থার শো-রুম তৈরি হয়েছে। এডিডিএ-র মূল প্রশাসনিক ভবন সংস্কার করে ঝকঝকে করা হয়েছে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে পুরসভারও ভোল বদলে ঝাঁ চকচকে হয়েছে। বসেছে লিফট। অথচ, মহকুমাশাসকের অফিসের হাল পাল্টায়নি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, নতুন জেলায় দুর্গাপুর মহকুমার আয়তন হয়তো কমবে। জেলা সদরও হবে আসানসোলে। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সিদ্ধান্তে খুশি বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২১ মার্চ রাজ্য নতুন ভবনের ছাড়পত্র দিয়েছে। সিটি সেন্টারে চার তলা ভবন তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে এডিডিএ। বছরখানেকে নির্মাণ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।