ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুর মিশ্র ইস্পাত কারখানার (এএসপি) বিলগ্নিকরণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দুর্গাপুরে টানা শ্রমিক আন্দোলন হয়েছে। এর জেরে পিছিয়ে গিয়েছে বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়া। কিন্তু তথ্য জানার অধিকারের আইনে চণ্ডীগড়ের এক বাসিন্দার এক প্রশ্নের জবাবে, অর্থ দফতর বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মধ্যে এএসপির পরিবর্তে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার (ডিএসপি) নাম উল্লেখ করায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দুর্গাপুরে। যদিও বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্রসিংহ অহলুওয়ালিয়া সোমবার অর্থ দফতরে চিঠি দিয়ে ‘ত্রুটি’ সংশোধনের আর্জি জানিয়েছেন।
এএসপি বিলগ্নিকরণের বিরুদ্ধে বিএমএস, সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, আইএনটিটিইউসি-সহ সব শ্রমিক সংগঠন আন্দোলন করছে বহু দিন ধরে। অর্থ দফতরের ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট’ থেকে ২৪ অগস্ট চণ্ডীগড়ের ওই বাসিন্দার প্রশ্নের উত্তর পাঠানো হয়। সোমবার তা প্রকাশ্যে আসে। অর্থ দফতরের তরফে পাঠানো উত্তরে ৯ নম্বরে নাম রয়েছে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত কারখানার। সেগুলি হল— সালেম স্টিল প্ল্যান্ট, ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্ট এবং দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট। এ দিন সে কথা জানার পরে, ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দুর্গাপুরের শ্রমিক মহলে।
সিটুর রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন কোনও খবর জানা নেই। তবে যদি তা হয়, তা হলে আন্দোলন হবে। কোনও ভাবেই একটিও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ মানা হবে না।’’ আইএনটিইউসি নেতা বিকাশ ঘটক বলেন, ‘‘এএসপি, ডিএসপি— কোনও কারখানারই বিলগ্নিকরণ করা যাবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের বিলগ্নিকরণের যে কোনও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই ধারাবাহিক আন্দোলন হবে।’’ আইএনটিটিইউসি নেতা জয়ন্ত রক্ষিতও বলেন, ‘‘বিজেপি সরকারকে বিশ্বাস নেই। তবে যদি এমন হয়, তা হলে ব্যাপক আন্দোলন হবে।’’
এ দিকে, বিএমএস অনুমোদিত দুর্গাপুর ইস্পাত কর্মচারী সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক মানস চট্টোপাধ্যায় জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরণের বিরুদ্ধে তাঁরা। এএসপি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে তাঁরা আন্দোলন করে চলেছেন। তালিকায় ডিএসপির নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এটা প্রমাদ।’’ সাংসদ সুরেন্দ্রবাবু অবশ্য জানান, সোমবার তিনি অর্থ দফতরে চিঠি দিয়ে ত্রুটি সংশোধনের আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ডিএসপির নাম দেখে সেলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বুঝতে পারি, এএসপির বদলে ভুল করে ডিএসপির নাম উল্লেখ করা হয়েছে ওই তালিকায়। অবিলম্বে ত্রুটি সংশোধন করে সেই তালিকা আমায় এবং ফের চণ্ডীগড়ের ওই বাসিন্দার হাতে পৌঁছে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।’’