ন’টি কারখানা-সহ এমন ২৪টি নির্মাণকারী সংস্থাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠাল আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (আড্ডা)। — নিজস্ব চিত্র।
উন্নয়ন পর্ষদের ছাড়পত্র না নিয়েই একের পর এক আবাসন নির্মাণ! পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে অবাধে চলছে এই ধরনের বেআইনি নির্মাণ বলে অভিযোগ। এই অভিযোগেই ন’টি কারখানা-সহ এমন ২৪টি নির্মাণকারী সংস্থাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠাল আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (আড্ডা)। সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান পর্ষদ চেয়ারম্যান তথা রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, ছাড়পত্র (এনওসি) ছাড়া এ সব নির্মাণ হওয়ার কারণে রাজ্য সরকারের কর ফাঁকি পড়ছে।
আড্ডার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বিকেলে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘এই ২৪টি সংস্থার মধ্যে ১৪টি সংস্থাকে আগেও নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও তারা কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি। যার মধ্যে ন’টি কারখানা আছে। সেজন্য তাদেরকে দ্বিতীয়বার নোটিস দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও ১০টি নতুন সংস্থাকেও নোটিস পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু কেন এই কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হল? জবাবে তাপস বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী আড্ডার অনুমতি ছাড়া এই ধরনের আবাসন তৈরি করা যায় না। সর্বোপরি আসানসোল পুরনিগম যাতে কোনও ভাবেই এই সব সংস্থাগুলির তরফে আসা কোনও প্ল্যান পাস না করে, তার জন্য চিঠি লিখে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, সমস্ত ব্যাঙ্ক ও রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা ওই সংস্থাগুলিকে কোনও রকম আর্থিক সহযোগিতা বা বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি না দেয়।
তাপস এ-ও জানান, যে সংস্থাগুলির কারচুপির কারণে রাজ্যের রাজস্বে ঘাটতি হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘এই সব সংস্থাগুলি দু’বার সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। বেশ কিছু মানুষের থেকে তারা জমি নিয়ে সেই এলাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করছে। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আড্ডাকে জানাচ্ছে না। তারপর যাদের জমি তাদের মাধ্যমেই আবার বিক্রি করছে। যাঁরা জমিগুলি কিনছেন, তাঁরা জানেন না, যে আড্ডা এতে ছাড়পত্র দেয়নি। এই ছাড়পত্র না থাকলে বাড়ির প্ল্যান পাস হবে না। পুর নিগমের কোনও কাজ হবে না। বিদ্যুৎ দফতর বিদ্যুৎ দেবে না। ব্যাঙ্ক থেকেও তারা ঋণ পাবেন না।’’
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা তথা আসানসোল পুরো নিগমের কাউন্সিলর গুলাম সরোবর বলেন, ‘‘শাসক দলের নেতাদের মধ্যেই জমি মাফিয়ারা রমরমিয়ে এই ধরনের কারবার চালাচ্ছে। তাদের এই অবৈধ কারবারের ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।’’
বিজেপি রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদতেই এই ধরনের অবৈধ কাজকর্ম রাজ্য জুড়ে চলছে। উন্নয়ন পর্ষদ বা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ এই মাফিয়াদের সঙ্গে লড়াই করে রাজ্যের রাজস্ব বাড়ানোর জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে প্রয়োজনে বিজেপি পাশে থাকবে। দেশের স্বার্থে।’’