এসবিএসটিসি-র পুরনো ডিপোতে পড়ে রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র।
বছর চারেক আগে দু’টি আধুনিক অ্যাম্বুল্যান্স কিনেছিল আসানসোল পুরসভা। কিন্তু সেগুলির একটি আসানসোলের ঊষাগ্রাম লাগোয়া এসবিএসটিসি-র পুরনো ডিপোতে পড়ে রয়েছে। অন্যটিকে আসানসোলেরই বিভিন্ন টিকাকরণ কেন্দ্রে টিকা নিয়ে যাওয়া-আসার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, কর্মীর অভাবেই দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স যে উদ্দেশ্যে কেনা, তা অনুযায়ী ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭-য় এই দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স কেনা হয়। সেগুলিতে গুরুতর অসুস্থ কোনও রোগীকে বাড়ি বা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘ভেন্টিলেশন’-সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। এক পুরকর্তা জানান, প্রধানত এই ধরনের অ্যাম্বুল্যান্সে ‘ড্রেসার’ কর্মী প্রয়োজন। কিন্তু পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগে এই পদের কর্মী নেই। পাশাপাশি, আসানসোল পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগে বিভিন্ন পদে কর্মীও অপর্যাপ্ত। ফলে, দু’টি আধুনিক অ্যাম্বুল্যান্স কেনার উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স সাধারণ রোগীদের নিয়ে যাওয়া-আসার কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুরসভা। কিন্তু সাধারণ মানের অ্যাম্বুল্যান্স থেকে এই ধরনের অ্যাম্বুল্যান্সে প্রায় দ্বিগুণ তেল লাগে। তাই কেউ তা নিতে চান না বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা ডিজ়েল, পেট্রলের দাম-সহ অতিরিক্ত ২৫০ টাকা নেয়। তাঁরা জানান, তাতে এই ধরনের অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতা যেতে প্রায় ১০ হাজার টাকা লাগবে। সেখানে পুরসভার সাধারণ মানের অ্যাম্বুল্যান্সে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়। এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি পুর-কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। সিপিএম নেতা তথা আসানসোল পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা তাপস কবির মন্তব্য, “বিচক্ষণতার অভাবে ভাল উদ্যোগ মাঠে মারা গেল। আগে পরিকাঠামোগত ঘাটতি পূরণ না করে, এ ধরনের অ্যাম্বুল্যান্স কিনে কার্যত টাকার অপচয় করা হল।” প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, “পুরসভাকেই সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে হবে, এমন কথা ছিল না। রোগীর পরিবার নিজেরাই স্বাস্থ্যকর্মী জোগাড় করে সঙ্গে নিয়ে যাবে, এমনটা ভেবেই এগুলি আমি মেয়র থাকাকালীন কেনা হয়েছিল। আমরা চাই, এগুলিকে ঠিক ভাবে ব্যবহার করা হোক।” এ প্রসঙ্গে পুর-প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স দু’টি অনেক আগে কেনা হয়েছে। এখন কী ভাবে সেগুলিকে ঠিক কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।”