তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র।
বনকাটি, শ্যামবাজার ও অযোধ্যা— কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতের এই তিনটি গ্রাম নামে আলাদা। কিন্তু এদের ভৌগোলিক অবস্থান দেখে বোঝার উপায় নেই, এরা পৃথক। মনে হবে ‘যৌথ পরিবার’। প্রাচীন এই তিনটি জনপদে কোনও বারোয়ারি দুর্গাপুজো নেই। বেশ কয়েকটি পারিবারিক পুজোই এখানে প্রধান। তবে এ বার এই তিন গ্রামের বাসিন্দারা মিলিত ভাবে প্রথম দুর্গাপুজোর
আয়োজন করছেন।
এলাকায় গেলে দেখা যাবে, গ্রামের পাকা রাস্তার এক দিকে রয়েছে অযোধ্যা ও শ্যামবাজার। আর এক দিকে রয়েছে বনকাটি। মন্দির বেষ্টিত এই তিনটি গ্রামে জনসংখ্যা দিন-দিন বাড়ছে। গ্রামগুলিতে বছরের বিভিন্ন সময়ে নানা পুজো হয়। যেমন বনকাটির পিতলের রথ বিখ্যাত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই এলাকায় দশটিরও বেশি দুর্গাপুজো হয়ে থাকে। তবে সবই পারিবারিক। সেই সব পুজোতেই সকলেরই যোগদান থাকে। কিন্তু এত বড় জনপদে কোনও বারোয়ারি পুজো না থাকায়, কিছুটা হলেও আক্ষেপ ছিল সকলের মনে। নানা প্রতিকূলতায় বারোয়ারি পুজোর আয়োজন করা এত দিন সম্ভব হয়নি। অবশেষে ‘গ্রামবাসী দুর্গাপুজো কমিটি’ গঠন করে এ বছর পুজো আয়োজন করতে পেরে খুশি তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা।
কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, এই তিনটি গ্রামের অনেকেই বলতেন, একটি বারোয়ারি পুজোর আয়োজন করার কথা। এ বার সে আশা পূর্ণ হতে চলেছে। অযোধ্যা গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া মাঠে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। প্রতিমা একচালার। আপাতত পুজোর বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় দু’লক্ষ টাকা। কী ভাবে খরচ জোগাড় হচ্ছে? আয়োজকেরা জানান, তিনটি গ্রামের বহু বাসিন্দাই এগিয়ে এসেছেন। যে যেমন পেরেছেন, সাহায্য করছেন।
আয়োজকদের তরফে স্বপন আঁকুড়ে, অমর সূত্রধর, কালীপদ ধীবর, বিশ্বজিৎ আঁকুড়েরা বলেন, “দুর্গাপুজোর আয়োজন করা খুব বড় ব্যাপার। করে উঠতে পারব কি না, প্রথম দিকে কিছুটা শঙ্কায় ছিলাম। তবে দিন যত এগিয়ে আসছে মনে আনন্দটাও বাড়ছে। পুজোর চার দিন সব স্তরের মানুষ আনন্দ করতে পারবেন, তা ভেবে খুবই ভাল লাগছে।”
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ মতো করোনা-বিধি মেনে চলা হবে। বিধি সকলে মানছেন কি না, তা দেখার জন্য মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন।