অণ্ডালে অর্জুন সিংহ। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপিতে আসতে চেয়ে তৃণমূল ছাড়ার ‘ঘণ্টা বাজাচ্ছেন’ ‘আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র’— ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের এমন দাবি ফের উস্কে দিল জল্পনা। জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডালে সাংসদের ওই মন্তব্যের উদ্দেশ্য, আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। কারণ, জিতেন্দ্রবাবুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে সম্প্রতি নানা রকমের জল্পনা ও গুঞ্জন শোনা গিয়েছে জেলায়। যদিও জিতেন্দ্রবাবুর দাবি, তিনি ‘একাই’ আসানসোলের ‘প্রাক্তন মেয়র’ নন।
অণ্ডালের মেলা মাঠে আয়োজিত ‘আর নয় অন্যায়’ শীর্ষক কর্মসূচিতে এ দিন যোগ দিয়ে অর্জুনবাবু বলেন, ‘‘আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র আমাদের দলে আসতে চাইছেন। এর জন্য আমাদের দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই আমার সঙ্গে ঝগড়া করেছেন। উনি বলেছেন, ‘মেয়র যোগ দিলে আমি যাব কোথায়’?’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘আমি লক্ষ্মণবাবুকে আশ্বস্ত করেছি, ‘আমাদের দল সঙ্কীর্ণ নয়। স্ক্রিনিং করে কাজ হয়। আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র-সহ প্রতিদিনই কেউ না কেউ তৃণমূল ছাড়ার জন্য ঘণ্টা বাজাচ্ছেন।’’
নাম না করলেও অর্জুনবাবুর এই মন্তব্য জিতেন্দ্রবাবুর দিকে ইঙ্গিত করেই— এমনই দাবি জেলা রাজনীতির নিয়মিত ওঠাপড়ায় ওয়াকিবহালদের একাংশের। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে দলত্যাগ, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক, দলে প্রত্যাবর্তন— এমন নানা ঘটনাপ্রবাহ ঘটেছে জিতেন্দ্রবাবুকে কেন্দ্র করে। পাশাপাশি, জিতেন্দ্রবাবুর দল ছাড়ার পর্বে তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জল্পনা তৈরি হয় জেলার রাজনীতিতে। সূত্রের খবর, সেই সময়ে এর বিরোধিতায় দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার কাছে চিঠি দিয়েছিলেন লক্ষ্মণবাবুরা। অর্জুনবাবুর মন্তব্যে সেই পর্বের কথা বলা হচ্ছে বলেই মনে করছেন জেলার রাজনীতির নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
তবে জিতেন্দ্রবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আসানসোলে অনেক প্রাক্তন মেয়র আছেন। কাকে উদ্দেশ্য করে অর্জুনবাবু ওই মন্তব্য করেছেন, তা জানি না। তাই এ বিষয়ে আমার কিছু বলারও নেই।’’ এ দিকে, লক্ষ্মণবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘অর্জুনদা আমার প্রসঙ্গে যা বলেছেন, তা হাসির ছলেই। নেতৃত্ব যাঁকে দলে নেওয়ার নির্দেশ দেবেন, তা-ই আমরা মানব। এতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’’
এ দিন, অর্জুনবাবুর সঙ্গেই ওই কর্মসূচিতে যোগ দেন লক্ষ্মণবাবু, বিজেপি নেতা জয়ন্ত মিশ্র, সোমনাথ মোদী প্রমুখ।