ফাইল চিত্র।
গাড়ুই নদী সংস্কারের পাশাপাশি, আসানসোল শহরের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য ইতিমধ্যে ‘মাস্টার প্ল্যান’-এর প্রস্তাব উঠেছে। প্রস্তাবিত সে প্ল্যানে কুলটিকেও অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন অরবিন্দনগর, নিয়ামতপুরের প্রিয়া কলোনির বাসিন্দা এবং কুলটির বিজেপি বিধায়ক
অজয় পোদ্দার।
মাস্টার প্ল্যানের বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস অরুণ প্রসাদ। বিষয়টির কথা জানাজানি হতেই নিয়ামতপুরের প্রিয়া কলোনি এবং কুলটির অরবিন্দনগরের বাসিন্দারা কুলটির জন্য এই প্ল্যানের দাবি জানানোর নেপথ্যে তাঁদের ‘জল-যন্ত্রণা’র কথা বলছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষায় সামান্য বৃষ্টি হলেই এই দুই এলাকা প্লাবিত হয়।
সাম্প্রতিক বৃষ্টির জেরে এলাকার শতাধিক বাড়িতে জল ঢুকেছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, কুলটির রানিতলা, বিএনআর, বিডিওপাড়া, শিমুলগ্রাম-সহ আরও কিছু অঞ্চলের জল অরবিন্দনগরের একটি মাত্র ছোট নর্দমা দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় আশপাশের বাড়িতে প্রায় এক কোমর জল জমে গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত ঘোষের ক্ষোভ, “প্রায় তিন দশক ধরে এই সমস্যায় ভুগছি আমরা। পুরসভাকে বার বার বলেও লাভ হচ্ছে না!” একই ভাবে সবনপুর, চলবলপুর, লাইনপাড়-সহ কিছু এলাকার জল নিয়ামতপুরের প্রিয়া কলোনির বড় নালা দিয়ে বয়ে যায়। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থা ‘খুব খারাপ’ থাকায় প্রিয়া কলোনিও প্রতি বর্ষায় ভেসে যায় বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন সরকার বলেন, “খুবই সঙ্কটের মধ্যে রয়েছি। আমাদের দাবি, আসানসোলে যে মাস্টার প্ল্যানের কথা বলা হচ্ছে, তাতে আমাদের এলাকা-সহ কুলটি, নিয়ামতপুরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হোক।”
এত দিনেও সমস্যা মেটেনি কেন, সে প্রশ্নও উঠেছে। আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) ভাইস চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় জানান, অরবিন্দনগরের সমস্যা দূর করতে বিডিওপাড়া থেকে একটি বড় নালা তৈরির তোড়জোড় হয়েছিল। সে জন্য এডিডিএ থেকে পাঁচ কোটি টাকা অনুমোদনও করা হয়। সন্ন্যাসীতলা এলাকা দিয়ে নালাটি তৈরি করা হবে। কিন্তু সেখানে সরকারি খাসজমি অবৈধ ভাবে দখল করে রাখার অভিযোগ রয়েছে। তাই নালাটি তৈরি করা যায়নি। তবে উজ্জ্বলবাবুর দাবি, “বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্যোগী হচ্ছি।” এ দিকে, পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিয়া কলোনিতে নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বছর তিনেক আগে একটি প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। খরচ ধরা হয়, প্রায় দু’কোটি টাকা। কিন্তু অর্থের অভাবে সে কাজে হাত পড়েনি বলে জানা গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিধায়ক অজয় বলেন, “প্রয়োজনে বিধায়ক তহবিল থেকে আমি টাকা বরাদ্দ করব। কিন্তু প্রতি বর্ষায় বাসিন্দাদের এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়া দরকার। কুলটিকে অবশ্যই প্রস্তাবিত মাস্টার প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।” বিষয়টি নিয়ে আসানসোলের পুর-কমিশনার তথা এডিডিএ-র সিইও নীতীন সিংহানিয়া বলেন, “পুর-এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নতির বিষয়টি আমাদের ভাবনায় রয়েছে। কুলটিও সে ভাবনা থেকে
কোনও ভাবেই বাদ যাবে না।”