এ ভাবেই প্রতিদিন চলছে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র।
ন’মাস আগে নৌকাডুবিতে কুড়ি জনের মৃত্যুর স্মৃতি এখনও টাটকা। সেই ঘটনার পরে সতর্কতা নিতে প্রশাসন যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করে। কিন্তু শনিবার কালনায় ভাগীরথীর ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, বেশির ভাগ যাত্রীই গায়ে তুলছেন না জ্যাকেট।
গত বছর ১৪ মে ভবানী মন্দিরের উৎসব থেকে ফেরার পথে নৌকাডুবি হয়। ওই ঘটনার পরে ঘাটে বাড়তি আলো, জেটি সংস্কার-সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ করে প্রশাসন। বিপত্তি এড়াতে সম্প্রতি কালনার মহকুমাশাসক নিতীন সিংহানিয়া ২০০টি লাইফ জ্যাকেট তুলে দেন ফেরিঘাটের ইজারাদারদের হাতে।
কালনা ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা গেল, পাঁচটি নৌকা যাত্রী পরিবহণ করছে। নৌকাতেই পড়ে রয়েছে লাইফ জ্যাকেট। কিন্তু বেশির ভাগ যাত্রীর গায়ে জ্যাকেট নেই। কেউ কেউ আবার তা গায়ে তুললেও শক্ত করে বাঁধেননি। ঘাটের কাছাকাছি ইজারাদারদের টিকিট কাউন্টারের পাশে একটি ঘরে ডাঁই করে রাখা লাইফ জ্যাকেট। দীর্ঘ দিন ধরে সেগুলিও ব্যবহার হয় না বলে জানালেন ঘাটের কর্মীদের একাংশ।
কিন্তু জ্যাকেট গায়ে দিতে এমন অনীহা কেন? নিমাই সাহা নামে নিত্যযাত্রীর সটান জবাব, ‘‘অন্যের গায়ে দেওয়া জিনিস ব্যবহার করতে ভাল লাগে না।’’ পাশ থেকে এক জন আবার বলেন, ‘‘জ্যাকেট পরতে বেশ খানিকটা সময় লাগে। ব্যস্ত সময়ে ওসব ঝক্কি এড়ানোই ভাল।’’ অথচ নদীর অন্য পাড়ে রয়েছে নদিয়ার নৃসিংহপুর ঘাট। ফি দিন কয়েক হাজার মানুষ দিনভর বাজার, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন জায়গায় আসতে জলপথ ব্যবহার করেন। চলে পণ্য পরিবহণও। তা ছাড়া শীতের মরসুমে রয়েছে পিকনিক পার্টির ভিড়।
জ্যাকেট পরতে যাত্রীদের এমন অনীহার কথা জানেন কালনা ফেরিঘাটের ইজারাদারেরাও। এঁদেরই এক জন তপন ঘোষ বলেন, ‘‘লাউডস্পিকারে যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বারবার লাইফ জ্যাকেট পরার আবেদন করা হয়। কিন্তু লাভ হয় না।’’ তবে নৌকার মাঝিরা জ্যাকেট গায়ে দিচ্ছেন বলে তাঁর দাবি।
মহকুমাশাসক নিতীন সিংহানিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘দ্রুত অভিযান চালানো হবে। লাইফ জ্যাকেট না পরলে প্রথমে জরিমানা ও পরে নৌকায় না উঠতে দেওয়ার বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে।’’