—নিজস্ব চিত্র।
ঘরে একমুঠো চাল নেই। ভিক্ষা করে যা পাওয়া গিয়েছে, তা দিয়েই পেট চলবে তিন জনের। কিন্তু আগামীকাল পেটে ভাত জুটবে কি না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এই ভাবেই দুই অনাথ শিশুকে নিয়ে আধপেটা দিন কাটাচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের গলসির পারাজ গ্রামের ৭৫ বছরের বৃদ্ধা আনোয়ারা বিবি। বৃদ্ধার এমন দুর্দশাগ্রস্ত জীবনযাপনের কথা আশপাশে ছড়িয়ে পড়তেই হইচই গলসিতে।
এ এক-দু’দিনের গল্প। গত চার মাস ধরেই এ ভাবেই বেঁচে আনোয়ারা। তাঁর সঙ্গেই থাকে মৃত নাতনি লিমি বেগমের ১১ বছরের মেয়ে আমিনা খাতুন ও ৭ বছরের ছেলে প্রেম মণ্ডল। বয়সের কারণে এখন আর ভিক্ষাও করতে পারেন না বৃদ্ধা। মূলত দুই বাচ্চার জন্যই প্রতিবেশীদের বাড়িতে একটু চাল নিয়ে আসেন। দুই শিশুর মুখে ভাত তুলে দিতে মাঝে মাঝেই নিজে এক বেলা খেয়ে কাটান আনোয়ারা।
নিজের কাহিনি বলতে গিয়ে আনোয়ারা জানান, নাত-জামাই সুকুর মণ্ডল ক্যান্সারে মারা যাবার পরেই নাতনী লিমি হৃদরোগে মারা যান। তখন ছোট্ট প্রেম ৬ মাসের শিশু। তার পর থেকেই বর্ধমানে এসে দুই শিশুকে নিয়ে এসে থাকতে শুরু করেন আনোয়ারা। ঘর ভাড়া মেটাতে না পারায় দুবরাজের ডাঙাপাড়ার বাড়ি ছাড়তে হয় তাঁকে। এর পর মাস চারেক আগে গলসির পারাজ গ্রামের কুমোর পুকুর পাড়াতে স্বামীর ভিটেয় ফিরে যান তিনি। সেখানেও মেলেনি ঠাঁই। এখন দুই শিশুকে নিয়ে অন্যের একটি বাড়িতে রয়েছেন আনোয়ারা। জানেন, যে কোনও দিন তাঁকে এই বাড়ি ছাড়তে হতে পারে।
আনোয়ারার দুরবস্থার কথা শুনে গলসি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও দেবলীনা দাস বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পঞ্চায়েত প্রধানকে ইতিমধ্যে জানিয়েছি বিষয়টি। সামনের সোমবার বিষয়টি আমি নিজে দেখতে যাব।’’