আদালতে এখানেই বসেছিলেন অনুব্রত (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘড়ির কাঁটা তখন ১০টা ছুঁইছুঁই। আচমকা বোলপুরে তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ‘কেষ্ট’র বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ঘণ্টাখানেক পরই বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে আটক করে গাড়িতে তোলেন তদন্তকারীরা। তার পর যত সময় এগিয়েছে, অনুব্রতকে ঘিরে সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। বর্তমানে গরুপাচার-কাণ্ডে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে সিবিআই।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন অনুব্রত। তার পরই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, এর পর তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে। স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হতে পারে আসানসোল ইএসআই হাসপাতালে। সম্ভবত বৃহস্পতিবারই তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে।
অনুব্রতকে আটক করা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে চাপানউতর তৈরি হয়েছে। অনুব্রতের আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ বলেন, “অনুব্রতবাবুকে ৪১-এ ধারায় নোটিস দেওয়া হয়েছে। এই নোটিসে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়। গ্রেফতার নয়। ওঁকে আটক করা হয়েছে। আমার মক্কেল তদন্তে সহযোগিতা করবেন। তাতে সিবিআই সন্তুষ্ট হবে আশা রাখি।’’ তৃণমূলের ‘বাহুবলী’ নেতা আসায় নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে শীতলপুরের ইসিএল গেস্টহাউস। তাঁর অসুস্থতার কথা মাথায় রেখে অনুব্রতের জন্য ইএসআই হাসপাতালে ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
গরুপাচার মামলায় তৃণমূল নেতাকে মোট ১০ বার তলব করেছে সিবিআই। এর মধ্যে মাত্র এক বারই হাজিরা দিয়েছিলেন অনুব্রত। সম্প্রতি গত সোমবার তাঁকে তলব করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু হাজিরা দিতে না পারার কথা রবিবারই সিবিআইকে জানিয়েছিলেন অনুব্রত। রবিবার বোলপুরের বাড়ি থেকে কলকাতার চিনার পার্কের বাড়িতে আসেন তিনি। সোমবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে যান। সেখানে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন যে, অনুব্রতর যে অসুস্থতা রয়েছে, তাতে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা নেই। এর পর বোলপুরে ফিরে যান অনুব্রত।
সোমবারের পর বুধবার আবারও তলব করা হয় তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। কিন্তু, অসুস্থতার কথা বলে বুধবারও তিনি হাজিরা দেননি। সিবিআইয়ের কাছে সময় চেয়েছিলেন। বুধের রাত পোহাতেই বৃহস্পতিবার সকালে নাটকীয় ভাবে হানা দিয়ে অনুব্রতকে আটক করল সিবিআই।