স্কুলছুটদের ক্লাসে ফেরানো, প্রসূতিদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রচার, টীকাকরণ-সহ বহু কাজে প্রায় তিরিশ বছর ধরে তিনি এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে চলেছেন। তিনি কেতুগ্রামের কান্দরার বাসিন্দা সুপ্রভা ঘোষ। এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক থেকে সুপ্রভাদেবী-সহ রাজ্যের চার জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে আগামী ২২ ডিসেম্বর, দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ‘ন্যাশনাল লেভেল অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং পারফরমেন্স’ পুরস্কার দেওয়া হবে।
বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কোমরপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী সুপ্রভাদেবী। পুরস্কারের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় খুদেদের স্কুলমুখী করা, স্কুলছুটদের ক্লাসে ফেরানো-সহ পুরস্কার পাওয়ার সবকটি মাপকাঠিতেই উতরে গিয়েছেন সুপ্রভাদেবী।
বাসিন্দারা জানান, গত তিন দশক ধরে নিয়ম করে আমগড়িয়া, গোপালপুর প্রভৃতি এলাকায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যান সুপ্রভাদেবী। উদ্দেশ্যে একটাই, শিশু ও মায়ের পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের নির্দেশিকা দেওয়া এবং পোলিও, ফাইলেরিয়া-সহ বিভিন্ন রোগের টীকাকরণ করা। গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, কোনও ছাত্র দু’দিন না এলেই বাড়ি চলে আসেন ‘দিদি’।
এলাকার মহিলা শিখা দাস, শীলা দাস, সুলতি দাসেরা জানান, স্বাস্থ্যরক্ষায় বন্ধ্যাত্বকরণের গুরুত্ব সম্পর্কেও প্রচার চালান পঞ্চান্ন বছরের সুপ্রভাদেবী। তাঁর এই সাফল্যে খুশির হাওয়া পরিবার ও কর্মস্থলেও। মুরগ্রাম-গোপালপুর পঞ্চায়েতের সুপারভাইজার চন্দ্রা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সচেতনতা প্রচার-সহ বিভিন্ন কাজে ওনার সুনাম নজরে পড়ার মতো।’’ জেলা প্রকল্প আধিকারিক অনুপম দত্তও বলেন, ‘‘ওনার সাফল্য অন্য কর্মীদেরও উৎসাহিত করবে।’’ মায়ের সম্মান খুশি ছেলে আশিস ঘোষও।