পাঠানো হচ্ছে এই রকম চিঠি। নিজস্ব চিত্র
মোবাইলের দাপটে হাতে লেখা চিঠি কোণঠাসা। পোস্টকার্ডের জায়গা নিয়েছে নানা ‘মোবাইল অ্যাপ’। চিঠি লেখার অভ্যাস ফেরানোর বার্তা দিতে উদ্যোগী হল বর্ধমানের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ইংরেজির নতুন বছরে শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা-বার্তা ফোনে নয়, চিঠি লিখে জানাচ্ছে সংগঠনটি। সবুজায়নের লক্ষ্যে চিঠির সঙ্গে গাছের বীজও সেঁটে পাঠানো হচ্ছে। সেটি রোপণের অনুরোধ জানানো হচ্ছে চিঠিতে।
মেমারির পাল্লা রোডের ওই সংগঠনের কর্তারা জানান, তাঁদের ৩৩০ জন সদস্য রয়েছেন। নতুন বছরে তাঁদের সবাইকে পোস্টকার্ড বা ইনল্যান্ড লেটারে শুভেচ্ছা-বার্তা পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের কর্তা ও পরিচিত অনেককেও একই রকম চিঠি পাঠানো হচ্ছে। বড়দিনের আগে থেকে চিঠি লেখার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৪৫০টি চিঠি ডাকে পাঠানো হয়েছে। চিঠির সঙ্গে সাঁটা থাকছে একটি গাছের বীজ। চিঠিতে ওই বীজটি রোপণ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। চিঠি পাওয়ার খবর দিয়ে পাল্টা চিঠি পাঠাতেও বলা হচ্ছে। যে সব চিঠির বয়ান ভাল হবে, সেগুলি বাছাই করে লেখকদের পুরস্কার দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে সংগঠনের কর্তাদের।
সংগঠনটির তরফে সন্দীপন সরকার জানান, এই ভাবনায় একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি সামাজিক দিক রয়েছে— চিঠি লেখার অভ্যাস ফেরানো, নতুন প্রজন্মের কাছে চিঠির গুরুত্ব তুলে ধরা এবং সবুজায়ন। সন্দীপনের কথায়, ‘‘মাত্র ৫০ পয়সার একটি পোস্টকার্ডেই এতগুলি কাজ হচ্ছে। ফোনে বা মেসেজে তা হয়তো সম্ভব নয়।’’ অনেকেই পাল্টা চিঠি দেবেন, আশায় রয়েছেন তাঁরা।
এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন ডাক বিভাগের বর্ধমান আরএমএস শাখার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শ্যামাপ্রসাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে চিঠি লেখা অনেকটা কমে গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে এই প্রয়াস প্রশংসার দাবি রাখে।’’ চিঠির সঙ্গে গাছের বীজ দেওয়া প্রসঙ্গে জেলায় ‘গাছমাস্টার’ হিসাবে পরিচিত পূর্বস্থলীর শিক্ষক অরূপ চৌধুরী বলেন, ‘‘সচেতনতা মানুষকে অনেকটা এগিয়ে দিতে পারে। প্রশংসনীয় পদক্ষেপ।’’