কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল
পুত্র সন্তানের জন্ম হলে দিতে হবে ৫০০ টাকা। আর কন্যা সন্তান হলে ৩০০। প্রসূতির পরিবারের কাছ থেকে এ ভাবেই জোরজুলুম করে বেআইনি ভাবে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সন্তান প্রসবের পরেই হাসপাতালের লেবার রুমের ‘ওয়ার্ড গার্ল’রা এসে টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ তুলল বেশ কয়েক জন প্রসূতির পরিবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কয়েক দিন আগেই প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক প্রসূতির পরিবারের অভিযোগ, সন্তান প্রসবের পরেই লেবার রুম থেকে নীল পোশাক পরা তিন মহিলা বেরিয়ে এসে তাদের কাছে ৩০০ টাকা দাবি করেন। কী কারণে তাঁরা টাকা দাবি করছেন, জানতে চাইলে পরিবারকে জানানো হয়, ছেলে হলে ৫০০ টাকা আর মেয়ে হলে ৩০০ টাকা দিতে হয়। ওই প্রসূতির আত্মীয়া নীরা হেমব্রম বলেন, ‘‘মেয়ে হয়েছে বলে আমাদের কাছে ৩০০ টাকা দাবি করেছিলেন ওঁরা। আমি ২০০ টাকা নেওয়ার জন্য ওঁদের অনুরোধ করি। কিন্তু ওঁরা নাছোড় ছিলেন। ৩০০ টাকা নিয়েই ছাড়বেন এবং শেষমেশ তা-ই নিলেন।’’
এ ভাবে টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছে ওই হাসপাতালে ভর্তি নদিয়ার শান্তিপুরের বাসিন্দা এক প্রসূতির পরিবারও। ওই প্রসূতির আত্মীয়া হাওয়া বিবির অভিযোগ, ছেলে হওয়ায় তাঁদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা চেয়েছিলেন ‘ওয়ার্ড গার্ল’রা। তিনি বলেন, ‘‘বাচ্চার যদি ক্ষতি করে দেয়, এই ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি। টাকাও দিয়ে দিয়েছি।’’
কালনার সমুদ্রগড়ের বাসিন্দা আর এক প্রসূতিও এই জুমুলবাজির শিকার বলে দাবি করেছেন। ওই প্রসূতির পরিবারের সদস্য পার্বতী বিশ্বাস বলছেন, ‘‘মেয়ে হয়েছিল বলে ৩০০ টাকা চেয়েছিল আমাদের কাছে। কিন্তু তখন ২০০ টাকাই দিতে পেরেছিলাম আর কিছু ছিল না বলে। আমাদের তখন বলা হয়, ছুটির আগে ওই ১০০ টাকা দিয়েই যেতে হবে।’’
যদিও কোনও প্রসূতির পরিবারই হাসপাতালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি এখনও পর্যন্ত। এ নিয়ে হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সুব্রত সামন্ত বলেন, ‘‘এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে অভিযোগ যখন উঠেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনাগুলি সত্যি হলে যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’