TMC

দলের নেতার জমি ‘দখল’, অভিযুক্ত নেত্রী

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

জামালপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৬:৩৭
Share:

জামালপুরে লাল ঝান্ডা পুঁতে ‘দখল’ নেওয়া জমি। নিজস্ব চিত্র।

লাল ঝান্ডা পুঁতে দলেরই এক নেতার জমি দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে। জমির মালিক কাশীনাথ সরকার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানায় পাহাড়পুর গ্রামের ওই নেত্রী শিখা রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। দলও সমর্থন করেনি নেত্রীর ‘কাণ্ড’। শিখাদেবীর অবশ্য দাবি, “জমির মালিক আমাকে ও আমার ছেলেকে বারবার আইনি নোটিস পাঠিয়ে হয়রান করছেন। তার বদলা নিতেই জমিতে লাল কাপড়ের ঝান্ডা লাগানো হয়েছে।’’

Advertisement

ঝান্ডায় লাল রঙ কেন? নেত্রীর জবাব, “লাল মানেই তো বিপদ। সেই সঙ্কেত দেওয়ার জন্যই লাল ঝান্ডা পুঁতেছি। জমিতে নামার আগে চিন্তা করতে হবে।’’

কাশীনাথবাবুর বাড়ি পাহাড়পুর গ্রামেই। পুলিশের কাছে তাঁর অভিযোগ, পাহাড়পুরের জ্যোৎসবুল মৌজায় ৩৩৩ দাগে তাঁর ৬৯ শতক জমি রয়েছে। ১৯৪৯ সালে পাহাড়পুর গ্রামের ফকির বাগদির কাছ থেকে তাঁর বাবা সেটি কেনেন। তাঁদের কাছে সরকারি নথিও রয়েছে। তিনি বলেন, “সত্তর বছরের বেশি ওই জমিতে চাষ করছি। এখন নিজেকে তৃণমূল নেত্রী দাবি করে শিখা রায় ও তাঁর ছেলে বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাক্টর নিয়ে ওই জমিতে চাষ দিয়েছেন। বেগুনের চারা লাগিয়েছেন। শুক্রবার লাল ঝান্ডাও পুঁতেছেন। পুলিশ, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

Advertisement

শিখাদেবীর পাল্টা দাবি, “ওই জমি আমার শ্বশুরমশাইয়ের। তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে ভুল বুঝিয়ে বা অন্য কাউকে সাজিয়ে নিয়ে গিয়ে ওই জমি এক প্রকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।’’ তবে যে জমিটি ‘দখল’ করা হয়েছে সেই জমিটি আদালতের বিচারাধীন নয় বলেও দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “কাশীনাথ সরকার নানা কারণে বারবার আইনের নোটিস পাঠিয়ে আমাদের হয়রান করছেন। তার বদলা নিতেই ৩৩৩ দাগের ওই জমিতে চাষ করে বেগুন চারা লাগিয়েছি। শুক্রবার দিনের আলোতেই ঝান্ডা পুঁতেছি।’’

শিখাদেবীর আচরণে ক্ষুব্ধ চকদিঘির পঞ্চায়েত প্রধান, তৃণমূল নেতা গৌরসুন্দর মণ্ডল। তিনি বলেন, “শিখাদেবী ঠিক কাজ করেননি। এ কাজের জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’’ জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক সভাপতি মেহেমুদ খান বলেন, “বিষয়টি জানি না। প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা জিতেন ডোকালের মন্তব্য, “লাল ঝান্ডা পুঁতে কি আগের জমানা ফিরিয়ে আনতে চাইছে তৃণমূল! যেখানে দলের লোকের জমিই নিরাপদে থাকছে না, সেখানে আমাদের জমিগুলির কী হতে পারে ভেবে ভয় লাগছে।’’ সিপিএমের স্থানীয় নেতাদের অবশ্য দাবি, তাঁদের জমানায় লাল ঝান্ডা পুঁতে জমি ‘দখল’ করা হত না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement