প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী-মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরের বামুনাড়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। মৃতের পরিবারের তরফে সম্প্রতি রাজ্য ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন’কে চিঠি দিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কমিশনের কাছে পাঠানো চিঠিতে দুর্গাপুরের স্বপনকুমার ঘোষ জানিয়েছেন, সর্দি, কাশি ও মাথা ব্যথার উপসর্গ থাকায় ৯ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে ছেলে স্নেহাংশু ঘোষকে (১৭) ভর্তি করানো হয়। তাঁর অভিযোগ, তার পর থেকে হাসপাতাল থেকে ছেলের স্বাস্থ্যের বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। হঠাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা নাগাদ তাঁদের জানানো হয়, ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে। এর পরে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ স্নেহাংশু মারা যায়। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘১৩ সেপ্টেম্বর রাতে ছেলে ফোনে সকলের সঙ্গে কথা বলেছে। এক দিনের মধ্যে ছেলের শারীরিক অবস্থার এত অবনতি কী ভাবে হল জানি না।’’ তাঁর অভিযোগ, ওই হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা গাফিলতির পরিচয় দিয়েছেন। এমনকি, ছেলের মৃত্যুর পরে মেডিক্যাল রিপোর্টের কাগজপত্রও তাঁদের হাতে দেওয়া হয়নি।
স্বপনবাবুর বাড়ি বেনাচিতির নতুনপল্লিতে। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের বাস্তুকার। কর্মসূত্রে থাকেন বহরমপুরে। অসুস্থ হয়ে তিনি কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেই সময়ে ছেলের সর্দি, কাশি ও মাথা ব্যথার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁর স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান। স্বপনবাবুর দাবি, সেখানে পারিবারিক চিকিৎসককে দেখানোর পরে তিনি ছেলের জন্য অক্সিজেনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন। তবে হাসপাতালে শয্যা নেই বলে জানিয়ে ওই হাসপাতাল এবং আরও দু’টি হাসপাতাল ছেলেকে ভর্তি নেয়নি বলে অভিযোগ তাঁর। এর পরে সিটি সেন্টারের একটি নার্সিংহোমে অক্সিজেন দেওয়ার পরে, ছেলেকে ভর্তি করানো হয় বামুনাড়ার ওই হাসপাতালে।
হাসপাতালের ডেপুটি মেডিক্যাল সুপার অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তবে হাসপাতালের তরফে কোনও গাফিলতি নেই। রোগীর হৃদরোগজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ায় অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়। কারণ, সেই সময়ে আমাদের হাসপাতালে কোনও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না।’’ তিনি জানান, যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত তাঁরা। মেডিক্যাল রিপোর্টের কাগজপত্র রোগীর পরিবারের কেউ এলে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে।