পণ্য নিলে তোলার জুলুম, অভিযোগ বাস মালিকদের

বাসে পণ্য আনা-নেওয়া করলে তোলা আদায় করছে তৃণমূলের কয়েক জন, আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে এই অভিযোগে সরব হলেন বাসমালিক ও কর্মীদের একাংশ। তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান তৃণমূল নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৫ ০২:০৪
Share:

আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে এ ভাবে পণ্য নেওয়া হলেই টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।

বাসে পণ্য আনা-নেওয়া করলে তোলা আদায় করছে তৃণমূলের কয়েক জন, আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে এই অভিযোগে সরব হলেন বাসমালিক ও কর্মীদের একাংশ। তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান তৃণমূল নেতারা।

Advertisement

আসানসোলের এই স্ট্যান্ডে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, নদিয়া এবং ঝাড়খণ্ডে অন্তত ৫০টি যাতায়াত করে। প্রায় সব বাসের ছাদেই পণ্য আনা-নেওয়া করা হয়। এর মাধ্যমে বাসের মালিক ও কর্মীদের বাড়তি কিছু রোজগার হয়। আর এই পণ্য পরিবহণের জন্যই তৃণমূলের কয়েক জন তাঁদের উপরে জুলুম শুরু করেছেন বলে অভিযোগ।

দুর্গাপুর বাস মালিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগে করেন, তাঁরা বাসের ছাদে বহু দিন ধরেই কাপড়ের গাঁট-সহ নানা জিনিস পরিবহণ করেন। সিটি বাসস্ট্যান্ডের কয়েক জন এজেন্ট পণ্য জোগাড়ের কাজ করে দিতেন। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে বাসের ছাদে পণ্য চাপালেই কয়েক জন তোলা আদায় করতে চলে আসছে। না দিতে চাইলে জোরজুলুম করছে। মারধরেরও হুমকি দিচ্ছে।’’ আর এক বাসমালিক সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা এই জুলুম আর মানতে পারছি না। তাই এলাকার বিধায়ক মলয় ঘটক-সহ তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছি।’’ একই অভিযোগ তৃণমূল প্রভাবিত নদিয়া জেলা বাস পরিবহণ কর্মী ইউনিয়নের সম্পাদক বিশ্বজিৎ সরকারের। তিনি জানান, পণ্য পরিবহণ করলে কর্মীরাও কিছু আয় করতে পারেন। কিন্তু আসানসোল বাসস্ট্যান্ডে তৃণমূলের কিছু লোকের জুলুমবাজি ও তোলা আদায়ে সেই লাভ জলে যাচ্ছে। সোমবার তাঁর দাবি, ‘‘আমরা বিষয়টি মেটাতে আজ আসানসোলে এসেছিলাম। কিন্তু আমাদেরই দলের লোক হয়েও ওঁরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে।’’

Advertisement

এ দিন বাসস্ট্যান্ড ঘুরে জানা যায়, এই অভিযোগ উঠছে মূলত বাচ্চু মিত্র নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। যদিও তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাস মালিকেরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করছেন। পন্য জোগাড় করে দেওয়া এজেন্টদের পাওনা মালিকেরা ঠিক মতো মেটাচ্ছেন কি না, আমি শুধু সেটুকু দেখভাল করি।’’

তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন অবশ্য বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। রাজ্য নেতৃত্বের তরফেও এ বিষয়ে তদন্ত করার একটি নির্দেশ এসেছে। তদন্ত শুরু করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই রিপোর্ট নেতৃত্বের কাছে জমা দেব। অভিযোগ প্রমাণ হলে শাস্তি হবে।’’ তিনি আরও জানান, শুধু আসানসোল নয়, রানিগঞ্জেও এই রকম একটি অভিযোগ উঠেছে। তারও তদন্ত হচ্ছে। কারা তৃণমূলের নামে এ সব করছে, রসিদ দিচ্ছে কি না, টাকা ব্যাঙ্কে জমা হচ্ছে কি না— সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তৃণমূল প্রভাবিত মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়াও বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়, এই রকম কাজ কেউ করলে দলীয় নেতৃত্ব ব্যবস্থা নেবেন।’’ আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটকের সঙ্গে এ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement