আসানসোল পুরসভায় অগ্নিমিত্রা পাল ও বিধান উপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
পদব্রজে আসানসোল বাজারে প্রচার করছিলেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। সেখান থেকে সটান ঢুকে যান আসানসোল পুরসভায়। মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের কাছে প্রশ্ন তোলেন, বার বার আর্জি জানানো সত্ত্বেও কেন তাঁদের নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রচার-হোর্ডিং দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগে শুক্রবার প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে পুরসভার সদর দরজার বাইরে অবস্থানও করেন অগ্নিমিত্রা। পরে, চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও বিধানের আশ্বাসে তিনি অবস্থান তোলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বাজারে প্রচার করার সময়, তাঁদের হোর্ডিং নেই কেন, তা দলের নেতা-কর্মীদের থেকে জানতে চান অগ্নিমিত্রা। তাঁরা অগ্নিমিত্রার কাছে দাবি করেন, হোর্ডিং চেয়ে বার বার আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুরসভা চাহিদা মতো হোর্ডিং দিচ্ছে না। এর পরেই, অনতি দূরে থাকা পুরসভা ভবনে পৌঁছে যান অগ্নিমিত্রা। সে সময় নিজের চেম্বারেই ছিলেন মেয়র বিধান। বিধানের কাছে অগ্নিমিত্রা অভিযোগ করেন, “ঠিক নিয়ম মেনে হোর্ডিং চাওয়া হচ্ছে। তার পরেও তা দেওয়া হচ্ছে না।” বিধান সে অভিযোগ
মানতে চাননি।
এর পরেই, সদলবলে হোডিং বিতরণে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে পুরসভার সদর দরজার সামনে অবস্থান শুরু করেন অগ্নিমিত্রা। বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো আমরা ৬০টি হোর্ডিং চেয়েছিলাম। কিন্তু দেওয়া হয়েছে ১২টা। আর তৃণমূল পেয়েছে, ৭০টি।” অগ্নিমিত্রার অবস্থানের খবর পেয়ে ভিড় জমাতে শুরু করেন বিজেপি নেতা, কর্মীরাও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশও চলে আসে।
প্রায় দেড় ঘণ্টা অবস্থান চলার পরে বিধান ও অমরনাথ ঘটনাস্থলে আসেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর পরেই শুরু হয় দু’পক্ষে বাদানুবাদ—
“অগ্নিমিত্রা: আমরা বার বার হোর্ডিং চাইছি। দিচ্ছেন না কেন হোর্ডিং?
বিধান: যতগুলো চেয়েছেন, ততগুলোই দেওয়া হয়েছে।
অগ্নিমিত্রা: আমরা ৬০টা চেয়ে পেয়েছি ১২টা। অথচ, গুণে দেখেছি, তৃণমূলের হোর্ডিং ৭০টা।
বিধান: আপনারা ২২টা চেয়েছিলেন, তা-ই দেওয়া হয়েছে।
অগ্নিমিত্রা: মোটেই না। আমরা ৬০টিই চেয়েছি।
বিধান: ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখন উঠুন।
অগ্নিমিত্রা: আগে হোর্ডিং দিন, তার পরে উঠব।”
— চড়া রোদের মধ্যে এমন বাদানুবাদ চলার সময়ে বার বার অমরনাথ এবং বিধান বিজেপি প্রার্থীকে অবস্থান তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তবে তাতে কর্ণপাত করেননি অগ্নিমিত্রা। শেষ পর্যন্ত অগ্নিমিত্রা দু’জনেরই আশ্বাসে অবস্থান তুলে নেন।
এ দিকে, পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে পুরসভার তত্ত্বাবধানে প্রায় ১৪৯টি হোর্ডিং আছে। ১৩টি এজেন্সিকে এই হোর্ডিংগুলি লিজ় দেওয়া হয়েছে। মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, হোর্ডিংগুলি প্রার্থীদের মধ্যে সমবণ্টন করতে হবে। তবে প্রার্থীরা কে, ক’টি হোর্ডিং চাইছেন তা পুরসভার কাছে লিখিত আবেদন করে জানাতে হবে। কোনও অনিয়ম হয়নি।”