পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা। শনিবার রাতে দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালে। ছবি: বিকাশ মশান ।
চিকিৎসায় গাফিলতিতে আশিস গঙ্গোপাধ্যায় (৫৮) নামে অঙ্গদপুরের এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালের ঘটনা। দেহ নিতে অস্বীকার করে শনিবার রাতে পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখান হাসপাতালে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিবার গাফিলতির লিখিতঅভিযোগ করেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের একটি বেসরকারি কারখানার কর্মী ছিলেন আশিস। গত বুধবার রাতে বাড়িতে আচমকা তিনি মাথা ঘুরে পড়ে যান। পরিবারের লোকজন তাঁকে ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করান। বাকিরা বাড়ি চলে গেলেও হাসপাতালেই ছিলেন তাঁর ছেলে রাজা। শনিবার রাতে তিনি এক বার কিছুক্ষণের জন্য হাসপাতাল থেকেবেরিয়েছিলেন। পরিবারের দাবি, সেই সময় আশিসের সঙ্গে যোগাযোগের বার বার চেষ্টা করা হলেও, তাঁর সঙ্গে থাকা মোবাইলটি বেজে যায়। পরে পাশের শয্যার এক রোগী ফোন ধরে জানান, আশিসের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক।
রাজা সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে অভিযোগ করেন, “আমি এসে দেখি বাবা অচেতন। কর্তব্যরত নার্সকে বলি, চিকিৎসককে খবর দিতে। কিন্তু তিনি তা করেননি। চার দিন ধরে এখানে ছিলাম। আধ ঘণ্টা আমি ছিলাম না। সেই সময়েই এই ঘটনা ঘটল। এই হাসপাতালে কোনও চিকিৎসা হয়নি।” আশিসের মেয়ে স্বাতীরও অভিযোগ, “আশপাশের রোগীদের থেকে জেনেছি, বাবা উঠে শৌচাগারে গিয়েছিলেন। তার পরে ফিরে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। উনি নার্সকে সে কথা বললেও নার্স গা করেননি।” স্বাতীর দাবি, তাঁরা হাসপপাতালে এসে বাবাকে দ্রুত আইসিইউ-তে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য বলেন। কিন্তু নার্স তা না করে অক্সিজেনের নল খুলে দেন। মৃতের ছেলেমেয়ের অভিযোগ, “চিকিৎসার গাফিলতিতে বাবা মারা গেলেন। আমরা এখানকার চিকিৎসক ও নার্সদের শাস্তি চাই।”
এ দিকে, মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে, আশিসের পরিজন ও পড়শিদের একাংশ হাসপাতালে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এলে পুলিশকে ঘিরেও ক্ষোভপ্রকাশ করতে থাকেন তাঁরা। রাজা বলেন, “এখানে রাতে কোনও চিকিৎসককে পাওয়া যায় না। নার্সেরা তাঁদের কর্তব্য পালন করেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত পুলিশ ডাকলেন। এ দিকে, নার্স, চিকিৎসক সবাই পালিয়ে গিয়েছেন।” পুলিশের পরামর্শে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পরিবার।
বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রোগীর পরিবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেছেন। সেটা তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।”