অণ্ডাল দক্ষিণবাজারে। নিজস্ব চিত্র।
‘অবৈধ’ জলের সংযোগ কাটতে গিয়ে বাসিন্দাদের একাংশের ‘বিক্ষোভের’ মুখে পড়লেন বিডিও (অণ্ডাল) সুদীপ্ত বিশ্বাস-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা। শুক্রবার রামপ্রসাদপুর পঞ্চায়েতের অণ্ডাল দক্ষিণবাজারের ঘটনা।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯-এ রামপ্রসাদপুরে দামোদরের পাড়ে জলপ্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। জল সরবরাহের জন্য রামপ্রসাদপুর ও দীর্ঘনালায় সাত লক্ষ ৫০ হাজার লিটার জল ধারণক্ষমতার দু’টি জলাধার (‘ওভারহেড ট্যাঙ্ক’) তৈরি করা হয়। রামপ্রসাদপুর ও অণ্ডাল পঞ্চায়েতে জল সরবরাহ করা হয় যথাক্রমে রামপ্রসাদপুর ও দীর্ঘনালার জলাধার থেকে।
প্রশাসন সূত্রে দাবি, ২০১৭ থেকে দীর্ঘনালা জলধারে জল-সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও অণ্ডাল ব্লক প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে গত ১১ জুন বৈঠক করে। সমীক্ষায় প্রশাসন দেখে, দামোদর থেকে দীর্ঘনালা জলাধারে জল সরবরাহের মূল পাইপলাইনে ছিদ্র করে কয়েকশো অবৈধ সংযোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে, দীর্ঘনালা জলাধারে ঠিক পরিমাণ জল উঠছে না। এর ফলে, অণ্ডাল পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র জল-সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ।
গত এক সপ্তাহ প্রচারের পরে, শুক্রবার থেকে অবৈধ সংযোগ কাটার কাজ শুরু করে প্রশাসন। পুলিশ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের রানিগঞ্জ কোলফিল্ড এরিয়া ‘ওয়ান’-এর সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত রায়-সহ দু’জন ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে দক্ষিণবাজারে যান বিডিও। কিন্তু অভিযোগ, এলাকায় একটি অবৈধ সংযোগ ছিন্ন করতেই বাসিন্দাদের একাংশ বিডিও-সহ উপস্থিত প্রশাসনের লোকজনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। আধ ঘণ্টা ওই পরিস্থিতি চলার পরে, বিডিও প্রয়োজনীয় আশ্বাস দিলে অবস্থা স্বাভাবিক হয়। বিডিও যদিও বলেন, ‘‘বিক্ষোভ হয়নি। বাসিন্দারা আমাদের কাছে তাঁদের সমস্যার কথা বলেছিলেন।
কেন এই ‘বিক্ষোভ’? বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, গোডাউনপাড়া থেকে রয়্যালিটি মোড়ের মাঝে অরবিন্দনগর, অশোকনগর ও নাজিরাবাদের একাংশে রামপ্রসাদপুর জলাধারের জল পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা অবৈধ সংযোগ নিয়েছেন। তৃণমূল পরিচালিত রামপ্রসাদপুর পঞ্চায়েতের প্রধান দিবাকর দত্ত ও কংগ্রেস নেতা ফৈয়জ আহমেদেরা জানান, প্রায় এক যুগ আগে জলপ্রকল্প তৈরি হলেও রামপ্রসাদপুরের একাংশে পানীয় জলের সমস্যা মেটেনি। তাঁদের দাবি, রামপ্রসাদপুর জলাধারে নদ থেকে জল আসার মূল পাইপলাইন থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জল বণ্টনের সংযোগকারী পাইপলাইনে জল আসে না। দিবাকরবাবু বলেন, “আমরা চাই, বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করে অবৈধ সংযোগ ছিন্ন করা হোক। তা হলেই, কোনও বিরোধের ঘটনা ঘটবে না।’’ তবে তাঁরা ঘেরাওয়ের কথা স্বীকার করেননি।
বিডিও (অণ্ডাল) সুদীপ্ত বিশ্বাস ও ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত রায়েরা জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।