এনআরসি-প্রচারে নামছে বিজেপিও, কারণে জল্পনা

‘এনআরসি’ (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) ও ‘সিএএ’ (নতুন নাগরিকত্ব আইন) নিয়ে কাটোয়া মহকুমায় পাল্টা প্রচারে নামার কথা জানিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

প্রণব দেবনাথ

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি রাজ্যে তিন কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনে তৃণমূলের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে বিজেপি। ফল বিশ্লেষণে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ খোদ জানিয়েছিলেন ‘এনআরসি-প্রভাবে’র কথা। এই পরিস্থিতিতে ‘এনআরসি’ (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) ও ‘সিএএ’ (নতুন নাগরিকত্ব আইন) নিয়ে কাটোয়া মহকুমায় পাল্টা প্রচারে নামার কথা জানিয়েছে বিজেপি। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এই ‘পাল্টা’ প্রচারকে বিশেষ আমল দিতে চাননি।

Advertisement

শুক্রবার বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বুথকর্মীদের শহর ও গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে মানুষকে এনআরসি ও সিএএ বিষয়ে বোঝানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই দু’টির উদ্দেশ্য কী, তা নিয়ে তথ্য সংবলিত লিফলেটও বিলি করা হবে।’’

কিন্তু কেন এই প্রচার-পরিকল্পনা? উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরে দিলীপবাবু বলেছিলেন, ‘‘এই ফল হওয়ার কথা ছিল না। খড়্গপুর (সদর), কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর— তিন বিধানসভা কেন্দ্রেই মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়েছিলাম। এনআরসি নিশ্চয়ই একটা প্রভাব ফেলেছে।’’ তা হলে কি কাটোয়া মহকুমায় আগামী পুরসভা, বিধানসভা নির্বাচন এবং ‘এনআরসি প্রভাব’-এর বিষয়টি মাথায় রেখেই এমন নির্দেশ, উঠেছে এমন প্রশ্নও।

Advertisement

পাশাপাশি, এলাকার রাজনৈতিক সমীকরণও ফের চর্চায় উঠেছে। গত পঞ্চায়েত ভোটে ‘বিরোধী-শূন্য’ ছিল কাটোয়া মহকুমা। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে দেখা যায়, ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে কাটোয়া বিধানসভা এলাকায় বিজেপি তৃণমূলকে টেক্কা দেয়। মঙ্গলকোট বিধানসভা এলাকাতেও ভোট বাড়ে তাদের। এমনকি, কাটোয়া, দাঁইহাট এই দু’টি পুরসভা এলাকাতেও এগিয়ে ছিল বিজেপি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের পর্যবেক্ষণ: লোকসভার ধাক্কা সামলে ‘এনআরসি ও সিএএ’-র বিরোধিতাকে সামনে রেখে এলাকায় ফের চাঙ্গা হয়েছে দল। মহকুমার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদেরও দাবি, এই সময়ে তৃণমূলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মসূচিও অনেকটাই বেশি বলে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি কাটোয়ায় এক কর্মী সম্মেলনে এসে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও এই বিষয়টিকে সামনে রেখে টানা প্রচারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এই পরিস্থিতিতে সাংগঠনিক ভাবে মহকুমায় তৃণমূলকে কতটা টেক্কা দিতে পারবে বিজেপি, তা নিয়ে সংশয়ে এলাকার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের একাংশ। ফলে, পাঁচ-সাত জন করে দলীয় কর্মীদের নিয়ে ‘নীরব-প্রচারে’ নামতে চাইছে বিজেপি, খবর দলীয় সূত্রে। যদিও কৃষ্ণবাবু দলের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলছেন, ‘‘দেশকে সুরক্ষা দেবে এনআরসি ও সিএএ। কিন্তু ভোট রাজনীতির জন্য তৃণমূল এর বিরোধিতা করে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। এই অপপ্রচার রুখতেই আমাদের পরিকল্পনা।’’

বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য: ‘‘এনআরসি ও সিএএ মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাই ওদের প্রচারে বিশেষ কোনও লাভ হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement