খাবার বিলি। নিজস্ব চিত্র
আবাস প্রকল্পের পরিস্থিতি দেখে কেন্দ্রের দল যেতে না যেতেই মিড-ডে মিলের হাল দেখতে জেলায় আসতে চলেছে কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ সপ্তাহেই জেলার স্কুলগুলিতে পরিদর্শন শুরু করতে পারে দলটি। তার আগে জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলার নির্দেশে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার আধিকারিক থেকে স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা জেলার সব স্কুল ঘুরে মিড-ডে মিলের পরিস্থিতির খোঁজ নিতে শুরু করেছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত জেলায় চার হাজার তিনশোটি স্কুল পরিদর্শন করা হয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী পোষণ’ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য মিড-ডে মিল কেমন চলছে, তা দেখা। তার সঙ্গে ‘জয়েন্ট রিভিউ মিশন’ নাম দিয়ে কেন্দ্রীয় দলটির সঙ্গে রাজ্যের আধিকারিকেরাও পরিদর্শনে থাকবেন। ২০১৫ সালের মিড-ডে মিল আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে কি না, খাদ্য সুরক্ষা নির্দেশিকা, আধার সংযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রী পোষণ’ প্রকল্পে শিক্ষকদের ভূমিকা, মিড-ডে মিলের খাবার শিক্ষক-অভিভাবকেরা চেখে দেখেন কি না, রাঁধুনি-সহায়কদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে কি না, খোঁজ নেবেন কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দলের সদস্যেরা।
প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি, ২৭টি বিষয়ে নজরদারি চালানো হবে। তার মধ্যে মিড-ডে মিলের জন্য কেন্দ্রের প্রদেয় টাকা কী ভাবে খরচ করা হচ্ছে, প্রকল্প চালু থাকায় সমাজ-জীবনে কী পরিবর্তন হচ্ছে, এই প্রকল্প ঘিরে রাজ্য, জেলা ও ব্লকস্তরে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সবই খোঁজ করা হবে। পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, স্কুলের রান্না ঘর, রান্নায় ব্যবহৃত জিনিসপত্রও দেখবে ওই দলটি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের কী মনোভাব, তা জানার চেষ্টা করবেন তাঁরা। মিড-ডে মিলের পরিদর্শনের সঙ্গে পড়ুয়ারা অপুষ্ট কি না, এলাকা ধরে সেই খোঁজও নেবেন পরিদর্শক দলের সদস্যেরা। পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলা থেকে বিভিন্ন পুরসভা ও ব্লকের স্কুলগুলিতে পরিদর্শক দল পাঠানো হচ্ছে। মূলত, খাবারের মান, রান্নাঘর-খাবারের জায়গা পরিচ্ছন্ন কি না এবং মিড-ডে মিলের প্রাথমিক শর্তাবলী মানা হচ্ছে কি না, তা পরীক্ষা করছেন তাঁরা। কোথাও কোথাও পুলিশ আধিকারিকেরাও ওই পরিদর্শক দলে রয়েছেন। খাবার খেয়ে তার গুণগত মানও রিপোর্টে জানাচ্ছেন তাঁরা।
তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলার সভাপতি আবু বক্করের দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার মিড-ডে মিলে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার চেষ্টা করছে। অথচ কেন্দ্র সরকার মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়ায়নি। ওই টাকায় মিল চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়ছে। পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্যও বরাদ্দ নেই।’’ এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক নীরব খান বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের বরাদ্দ তো নেই আবার রাঁধুনিদেরও সাম্মানিকও খুবই কম। কেন্দ্রীয় দলের কাছে এ সব নিয়ে আমরা প্রশ্ন রাখব।’’