শ্যামবাঁধে এই পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র।
অভিযোগ হয়েছে সরাসরি নবান্নে। বার্নপুরে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য নিয়ে নড়েচড়ে বসল ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। মঙ্গলবারই অভিযোগকারীদের ডেকে পাঠিয়ে বিশদ তথ্য নিয়েছেন দফতরের আসানসোল মহকুমা আধিকারিক তন্ময় রায়। বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) অশোক সাহাও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। অভিযোগকারীরা এ দিন আসানসোল পুরসভায় গিয়েও একটি অভিযোগ করেছেন। তবে জমি দখলে অভিযুক্তদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
বার্নপুরের চার বাসিন্দা বাদল দত্ত, দীনেশ প্রসাদ, সন্তোষ গড়াই ও সুকুমার দত্ত সোমবার নবান্নে গিয়ে অভিযোগ করেন, তাঁদের এলাকায় নবঘণ্টি, কালাঝরিয়া, বড়থলি, নরসিংহবাঁধ মৌজার বেশ কয়েক বিঘা খাস জমি দখল করে নিয়ে বেচে দিচ্ছে জমি মাফিয়ারা। চাষিদের উৎখাত করে জমি দখলও করে নেওয়া হচ্ছে। পুকুর বুজিয়ে বিক্রিতেও জড়িত রয়েছে সেই মাফিয়ারা। বাদলবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমার জমিতেও আমি চাষ করতে পারছি না। মাফিয়ারা মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে জবরদস্তি করে জমি দখল করে নিচ্ছে।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, স্থানীয় স্তরে প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। তাই সোজা নবান্নে যেতে হয়েছে।
এর পরেই তৎপরতা শুরু হয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে। মঙ্গলবার দফতরের আসানসোল মহকুমা আধিকারিক তন্ময়বাবু দাবি করেন, তাঁর দফতরে আগে এই অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে খবর পাওয়ার পরেই তিনি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তন্ময়বাবু বলেন, ‘‘আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। মৌজা, খতিয়ান, প্লট নম্বর-সহ কাগজপত্র জমা দিতে বলেছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক অশোকবাবুও জানান, এ বিষয়ে আগে কেউ তাঁর দফতরে অভিযোগ জানাননি। তিনি বলেন, ‘‘ব্লক ও মহকুমা স্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে পাঠানো হবে।’’
জমির এই বেআইনি কারবারে মূল পাণ্ডা হিসেবে যে দু’জনের নামে অভিযোগ জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে সেই আহমেদুল্লা খান ও সুরেশ যাদবের কোনও হদিস মেলেনি। স্থানীয় বাসিন্দারাও তাঁদের বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। জানা গিয়েছে, বার্নপুরের রহমতনগর এলাকায় আহমেদুল্লার বাড়ি রয়েছে। কিন্তু সেই বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কারও সাড়া মেলেনি এ দিন। এলাকার কিছু বাসিন্দা দাবি করেন, ওই ব্যক্তি ইস্কোয় কাজ করেন। এলাকার কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও তিনি জড়িত। বার্নপুরের শ্যামবাঁধ এলাকার ডাঙালপাড়া অঞ্চলে বাস করেন আর এক অভিযুক্ত সুরেশ যাদব। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য তাঁর সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানাতে পারেননি।