দীপাবলির আগে প্রথম বিদ্যুৎ পেল আদর্শ ব্যারাক

আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্যারাকটি প্রায় ৭০ বছরের পুরনো। সূর্যনগরের একটি বেসরকারি কটনমিল সংস্থা শ্রমিক-কর্মীদের বসবাসের জন্য এই ব্যারাকটি তৈরি করেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৫০
Share:

বাড়িতে বসল মিটার। নিজস্ব চিত্র

দীপাবলির উৎসব এ বার আরও রঙিন হবে আসানসোল পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যনগর আদর্শ ব্যারাকে। এ বারই প্রথম সেখানে পৌঁছেছে বিদ্যুতের সংযোগ। আসানসোল পুরসভার অনুদানে মঙ্গলবার এলাকার বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ছিলেন এলাকার সিপিএম কাউন্সিলর প্রিয়ব্রত সরকার ও বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আধিকারিকেরা। প্রথম বার বিদ্যুতের আলো পেয়ে খুশি ব্যারাকের বাসিন্দারাও।

Advertisement

আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্যারাকটি প্রায় ৭০ বছরের পুরনো। সূর্যনগরের একটি বেসরকারি কটনমিল সংস্থা শ্রমিক-কর্মীদের বসবাসের জন্য এই ব্যারাকটি তৈরি করেছিল। গোড়া থেকেই এখানে বিদ্যুতের সংযোগ ছিল না। প্রায় ৪০ বছর আগে ওই মিলে তালা পড়ে যায়। কিন্তু ব্যারাক ছেড়ে যাননি শ্রমিক-কর্মীদের পরিবার। পরে পুরসভার তরফে ব্যারাকে পানীয় জল সরবরাহ-সহ নানা পরিষেবার ব্যবস্থা করা হলেও বিদ্যুদয়ন হয়নি। এ নিয়ে ব্যারাকের বাসিন্দাদের ক্ষোভ ছিল। বিভিন্ন ভোটের সময়ে প্রচারে গেলে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের কাছে ব্যারাকের ১৩টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের আর্জি জানিয়েছেন।

কাউন্সিলর প্রিয়ব্রতবাবু জানান, ২০০৩ সালে তৎকালিন সিপিএম সাংসদ বিকাশ চৌধুরী এক বার এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষের আপত্তিতে কাজ এগোয়নি। অবশেষে গত লোকসভা ভোটের সময়ে ওই এলাকায় প্রচারে গিয়ে বাসিন্দাদের এই সমস্যার কথা জানতে পারেন শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি এই ব্যারাকে বিদ্যুদয়নের ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছিলেন। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের খরচ বাবদ প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার পুরোটাই ব্যয় করেছে আসানসোল পুরসভা। বাড়িতে সংযোগের জন্য মিটার বাবদ প্রত্যেক পরিবারকে এক হাজার টাকা করে বিদ্যুৎ দফতরে জমা দিতে হয়েছে। মেয়র বলেন, ‘‘পুরসভা অঞ্চলে বাস করেও বাসিন্দারা বিদ্যুৎহীন থাকবেন, তা হয় না। আমরা তাই যাবতীয় খরচ করে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করেছি।’’

Advertisement

দীপাবলির ঠিক আগেই ব্যারাকে বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে খুশি বাসিন্দারা। প্রবীণ বাসিন্দা রানিবালা দে বলেন, ‘‘এখানে কোনও দিন বিদ্যুতের আলো আসবে, সেই আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।’’ পাড়ায় ঘুরে দেখা যায়, ঘরে আলো-পাখা চালিয়ে পড়তে বসেছে খুদে পড়ুয়ারা। তাদেরই এক জন নবম শ্রেণির পল্লবি বাল্মীকি বলে, ‘‘এত দিন লম্ফ জ্বেলে পড়াশোনা করেছি। কেরোসিনের অভাব হলে বেশি রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করা যেত না। এ বার সেই সমস্যা মিটল।’’ পাড়ায় ঢোকার মুখে একটি কালী মন্দির রয়েছে। পুজোর জন্য সেটি পরিষ্কার করছেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, এত দিন পুজোর সময়ে জেনারেটর আনতে হত। এ বার বিদ্যুতের আলোতেই সেজে উঠবে মন্দির ও গোটা পাড়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement