এ ভাবেই প্রচারে বার হন শিক্ষিকা। নিজস্ব চিত্র
নারী নির্যাতন বন্ধের বার্তা দিতে গাড়ি চালিয়ে দেশের প্রায় দশ হাজার কিলোমিটার পথ যাত্রা করলেন পূর্বস্থলীর এক শিক্ষিকা। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের রাজাপুরের বছর চল্লিশের শিক্ষিকা সুতপা দাস ৩০ সেপ্টেম্বর নিজের গ্রাম থেকে গাড়ি নিয়ে রওনা দেন। এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশের নানা প্রান্তে সচেতনতার বার্তা দিয়ে বুধবার তাঁর যাত্রা শেষ হয় কলকাতায়।
বাঘনাপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের শারীরশিক্ষা বিভাগের শিক্ষিকা সুতপার ভ্রমণ, পর্বতারোহণের নেশা রয়েছে। বছর দুয়েক ধরে তিনি শুরু করেছেন দেশের নানা প্রান্তে সমাজ সচেতনতার বার্তা দেওয়ার কাজ। এ বার পুজোর পঞ্চমীর দিন গাড়িতে নারী নির্যাতন বন্ধের স্লোগান লিখে বেরিয়ে পড়েন। ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাত, দমন, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ হয়ে পৌঁছন ওড়িশায়। সেখান থেকে ফিরেছেন বাংলায়।
শিক্ষিকা বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরনোর পরে প্রতিদিন সমতল রাস্তায় ৪৫০-৫০০ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়েছি। পাহাড়ি রাস্তা হলে চালিয়েছি ২০০-২৫০ কিলোমিটার। সন্ধ্যায় বিশ্রাম নিয়েছি। তবে দীর্ঘ যাত্রাপথে বহু জায়গায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে সেখানকার মেয়েদের সমস্যা জানতে চেয়েছি। মেয়েদের উপরে অত্যাচার যাতে বন্ধ হয়, সে প্রত্যন্ত নানা এলাকায় মানুষকে বুঝিয়েছি।’’ তিনি জানান, বিভিন্ন রাজ্যে পণ প্রথা, ছেলে-মেয়ের মধ্যে বৈষম্য, কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া, কন্যাসন্তান প্রসব করলে অত্যাচারের মতো নানা ঘটনা ঘটে। অনেক রাজ্যে শিক্ষায় মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে। সে সবের বিরুদ্ধে প্রচার করেছেন বলে জানান তিনি। দীর্ঘ যাত্রাপথে তেমন কোনও বিপদের মুখে পড়তে হয়নি বলে জানান সুতপা। বরং, দেশের নানা প্রান্তে বহু মানুষ বাড়িতে থাকতে দেওয়া-সহ নানা ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানান, মে মাসে স্কুলের দুই শিক্ষিকাকে নিয়ে গিয়েছিলেন নেপাল। প্রায় চার হাজার কিলোমিটার যাত্রাপথে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের আর্জি জানান তাঁরা।
সুতপা বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরে কিছু দিন পড়াশোনা করে আবার সচেতনেতার বার্তা নিয়ে বেরিয়েপড়ব লাদাখ, কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীর জন্য।’’