— প্রতীকী চিত্র।
সাড়ে তিন মাস আগে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল বছর তেরোর ছেলের। সে মৃত্যুর কারণ এখনও খুঁজছেন বাবা-মা। তার মধ্যেই ছেলে যে স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছিল, তারা জানুয়ারি থেকে মার্চের ‘বকেয়া’ বেতন চেয়েছে বলে অভিযোগ। বর্ধমান শহরের বেসরকারি ওই স্কুলের এমন আচরণ নিয়ে জেলা ও মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন দম্পতি। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে এমন ঘটেছে। মৃত পড়ুয়ার ফি নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল না।
গত ডিসেম্বরে বাড়িতে তিন ফুট উচ্চতা থেকে গলায় ফাঁস লাগানো ও মেঝেতে হাঁটু মোড়া অবস্থায় মেলে ওই ছাত্রের দেহ। অভিভাবকেরা জানান, কী কারণে এমন মৃত্যু, তা এখনও তাঁদের অজানা। ছেলে কোনও ‘অনলাইন গেম’-এর খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ তাঁদের ও পুলিশের। বাবা-মায়ের অভিযোগ, তখন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে স্কুলে গেলেও, বিশেষ সহযোগিতা মেলেনি। কিন্তু সম্প্রতি স্কুল থেকে ফোন করে প্রায় ১৩ হাজার টাকা ফি মেটাতে বলা হয়।
বুধবার ছাত্রের বাবা-মা জেলা প্রশাসনের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ জানান। ছেলেটির বাবা বলেন, ‘‘ওই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের এমন কাণ্ডে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্কুলের পরিবেশ ও প্রশাসন যাতে মানবিক হয় এবং কোনও সন্তানের অভিভাবককে আর এমন মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সে জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছি।’’ মৃত ছাত্রের মায়ের দাবি, ‘‘আমরা দু’জনই শিক্ষকতা করি। পড়ুয়াদের সঙ্গে স্কুলের সম্পর্ক কেমন হয়, তা জানি। কিন্তু ছেলে যে স্কুলে পড়ত, তারা ওই ঘটনার পরে খোঁজখবর করেনি। স্কুলে শোক-প্রস্তাবও নেওয়া হয়নি। অথচ, এখন বেতন চাইছে!’’
স্কুলের অধ্যক্ষ ফাদার মারিয়া জোসেফ যদিও দাবি করেন, স্কুলের সফ্টওয়্যার থেকে কোন পড়ুয়াদের বেতন বাকি, সে তথ্য মেলে। তার ভিত্তিতে এক কর্মী সবাইকে ফোন করেন। সে সূত্রেই ওই পরিবারের কাছে ফোন গিয়েছে। ভুল বুঝে স্কুলের তরফে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার পরে, স্কুলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি তাঁদের। পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রতীক সিংহ বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক বিষয়। ওই স্কুল কেন এমন করল, তা জানতে চাইব।’’