পড়ুয়াদের তুলনায় খুবই কম শিক্ষকের সংখ্যা। প্রতীকী চিত্র।
পড়ুয়া পাঁচশোর বেশি। স্কুলে পূর্ণসময়ের শিক্ষিকার সংখ্যা মাত্র সাত। নেই গণিতের এক জন শিক্ষিকাও। নবম-দশমের গণিত পরীক্ষার খাতা দেখেন বাইরের শিক্ষিকারা। এমনই অবস্থা পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটুলি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের। শিক্ষিকাদের দাবি, পঠনপাঠন চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। বেশি সমস্যা হচ্ছে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে শিক্ষিকার অনুমোদিত পদ ১৭টি। কিন্তু এখন পূর্ণসময়ের শিক্ষিকা রয়েছেন সাত জন। আর রয়েছেন তিন জন পার্শ্বশিক্ষিকা। কোনও শিক্ষিকা স্কুলে অনুপস্থিত থাকলে বাকিদের চাপ বাড়ে। ১৯৯৮-র মে থেকে স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষিকা। অভাব রয়েছে কর্মশিক্ষা, জীবনবিজ্ঞান, ভূগোল, ভৌতবিজ্ঞান এবং বাংলা বিষয়ের শিক্ষিকার। অনেক শিক্ষিকা অবসর নিয়েছেন। ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালের মাধ্যমে অন্য স্কুলে বদলি হয়েছেন চার জন। তাঁদের পরিবর্তে কাউকে পাঠানো হয়নি স্কুলে। এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘গণিতের এক জন শিক্ষিকাও নেই। ছাত্রছাত্রীদের গণিত শেখানো সম্ভব হয় না। নবম ও দশম শ্রেণির গণিত পরীক্ষার খাতা দেখেন অন্য স্কুলের শিক্ষিকারা।’’
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুরভী মান্ডি বলেন, ‘‘সব থেকে খারাপ অবস্থা বিজ্ঞান বিভাগের। আমি জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা। বিজ্ঞানের অন্য বিষয়গুলি যতটা পারি, ছাত্রীদের শেখাই।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘পড়াশোনার বাইরে, মিড-ডে মিল প্রকল্প চালানোর মতো আরও অনেক কাজ থাকে। শিক্ষিকার অভাবে পড়াতে সমস্যা হয়। দ্বিগুণ পরিশ্রম করতে হয় শিক্ষিকাদের। সমস্যার কথা জানানো হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।’’
পার্শ্বশিক্ষিকা লক্ষ্মী মজুমদার বলেন, ‘‘আমি জীববিদ্যার শিক্ষিকা। সপ্তম শ্রেণির গণিতের ক্লাস নিয়মিত নিতে হয় আমাকে। অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রীদেরও মাঝেমধ্যে গণিত শেখাতে হয়। যতটুকু জানি, ততটুকুই শেখাই। ছাত্রীদের বলে দিয়েছি, সব প্রশ্নের উত্তর আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। সব ক্লাসেই মেধাবী কিছু ছাত্রী থাকে। গণিতের মেধাবী ছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে সমস্যা হয়।’’
দশম শ্রেণির ছাত্রী মল্লিকা ঘোষ, নবম শ্রেণির প্রান্তিকা ঘোষ-দের কথায়, ‘‘শিক্ষিকার অভাবে মাঝেমধ্যেই ক্লাস হয় না। গণিতের জন্য নির্ভর করতে হয় বাইরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরে।’’ কালনার সহকারী মহকুমা স্কুল পরিদর্শক জহরলাল প্রামাণিক বলেন, ‘‘স্কুলের সমস্যার কথা জেলায় জানানো হবে।’’