অন্ডাল স্টেশনে চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র।
শিল্পাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নতি ও রেলযাত্রায় নিরবিচ্ছিন্ন গতি বজায় রাখতে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় নতুন ‘বাইপাস রেললাইন’ তৈরি করার কথা জানিয়েছেন। চলতি অর্থ বছরেই তা হয়ে যাবে বলে আশা। পাশাপাশি, অন্ডাল স্টেশনে যাওয়া-আসার দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধানও হবে বলে দাবি করা হয়েছে।
পূর্ব রেল জানিয়েছে, আসানসোল ডিভিশনের অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি বহু দিন থেকে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে বিভিন্ন বণিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত রেললাইন না থাকায় যাত্রিবাহী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্ডাল স্টেশনকে ‘অমৃত ভারত যোজনা প্রকল্পে’ অন্তর্ভুক্ত পরে অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় নতুন একটি বাইপাস তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এটি অন্ডাল লিঙ্ক এবং কাজোড়া গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় তৈরি হবে। অন্ডাল-আসানসোল শাখার বক্তারনগর স্টেশনকেও যুক্ত করা হবে। এই রেললাইনটি হাওড়ার দিকে ২.৫৪ কিলোমিটার এবং সাঁইথিয়ার দিকে ১.৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এটি তৈরিতে খরচ হচ্ছে ৯৮ কোটি টাকা।” কৌশিক জানান, এই লাইনটি তৈরি হলে, নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে ট্রেন চলাচল সম্ভব হবে। পণ্যবাহী ট্রেন বাধাহীন ভাবে চললে এক এলাকা থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য অন্য এলাকায় সময়ে পৌঁছে দেওয়াটা সম্ভব হবে।
রেলের এই কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সম্পাদক শচীন রায় বলেন, “শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে পশ্চিম বর্ধমান জেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। ফলে, এই জেলার সঙ্গে দেশের নানা প্রান্তের পণ্য আদানপ্রদান সহজে হওয়া দরকার। নতুন লাইনটির ফলে সবার সুবিধা হবে।” উখড়া চেম্বার অব কমার্সের কার্যকরী সভাপতি সীতারাম বার্নওয়ালেরও বক্তব্য, “এর ফলে পণ্য পরিবহণে সুবিধা হবে।” অন্ডালের বস্ত্র ব্যবসায়ী বিকাশ কেডিয়ার প্রতিক্রিয়া, “রেলকে সাধুবাদ জানাই। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে তার প্রভাব পড়ে। অন্ডাল বাজারে মানুষের আসা-যাওয়া বাড়বে। বিক্রিবাটা বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে।”
এ দিকে, পূর্ব রেল সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, অন্ডাল স্টেশনে যাতায়াতের জন্য উত্তর প্রান্তের বাসিন্দাদের একটি টানেলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। কিন্তু তা খুবই সঙ্কীর্ণ। বর্ষায় সমস্যা আরও বাড়ে। এই বিষয়েও রেল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে বলে দাবি। রেল জানিয়েছে, প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ করে স্টেশনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা হয়েছে। টানেলের পাশে চওড়া রাস্তা-সহ যাওয়া-আসার
সুবন্দোবস্ত করা হচ্ছে।