Homeless Person

বাবার মৃত্যুর পরে বসবাস বাসস্টপের আবর্জনায়

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপের বাড়ি কাছেই আলাউদ্দিন খান বীথিতে। ২০১৬ সালের মার্চে সেখান থেকে পুলিশ উদ্ধার করে তাঁর বাবা, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী করুণাময় দত্তের দেহ।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৮
Share:

বাসস্টপে নোংরার মধ্যে থাকছেন ওই ব্যক্তি। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার পাশে বাসস্টপের ছাউনিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করছেন এক ব্যক্তি। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে মৌলানা আজাদ রোড ও অবনীন্দ্রনাথ বীথির সংযোগস্থলের বাসস্টপে এ ভাবেই দিন কাটছে মধ্যবয়সী সন্দীপ দত্তের। পুরসভার প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানান, কোনও সংস্থা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারে উদ্যোগী হলে পুরসভা সহায়তা করবে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপের বাড়ি কাছেই আলাউদ্দিন খান বীথিতে। ২০১৬ সালের মার্চে সেখান থেকে পুলিশ উদ্ধার করে তাঁর বাবা, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী করুণাময় দত্তের দেহ। তখন সেই বাড়িতেই ছিলেন সন্দীপ ও তাঁর দিদি স্বস্তিকা। প্রতিবেশীদের দাবি, তাঁরা দু’জনই মানসিক ভারসাম্যহীন। দু’জনকেই সিটি সেন্টারের বিভিন্ন জায়গায় মাঝে মাঝে দেখা যায়। সন্দীপকে কিছু দিন ধরে দেখা যাচ্ছে বাসস্টপের ছাউনির নীচে। তবে স্বস্তিকাকে কিছু দিন সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না।

এ দিন ওই বাসস্টপে গিয়ে দেখা যায়, টিনের ছাউনি ভগ্নপ্রায়। বৃষ্টিতে জল পড়ে ভিতরে। আশপাশে পার্থেনিয়ামের ঝোপ। মেঝেতে ছড়িয়ে আছে মল, মূত্র, নোংরা জামাকাপড়। পাশে পুরসভার ডাস্টবিন। সেখানেই শুয়ে রয়েছেন সন্দীপ। তাঁর দাবি, গত দু’মাস ধরে তিনি এখানেই রয়েছেন। মাঝে মাঝে কেউ তাঁকে খাবার দিয়ে যায়। খাবার না পেলে রাস্তায় ঘুরে চেয়েচিন্তে খান। কুকুরের দল মাঝে মাঝে তাঁকে বিরক্ত করে।

Advertisement

তাঁর দাবি, বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। পরে সর্বশিক্ষা মিশনের প্রশিক্ষণ নেন। তবে সব ঠিক মতো মনে করতে পারেন না। বাড়ির ঠিকানা মনে থাকলেও ফিরতে চান না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার এমনিতে কোনও অসুবিধা নেই। সিমেন্টের ধাপে ছোট জায়গায় শুতে হয়, এটুকু শুধু কষ্টের। মশা দু’একটা কামড়ায়।’’

ভবঘুরেদের আশ্রয়ের জন্য দুর্গাপুরের ফুলঝোড়ে পুরসভার তরফে ‘অভয়াশ্রম’ গড়ে তোলা হয়েছে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সেটি পরিচালনা করে। পুরসভার প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তিকে একাধিক বার উদ্ধার করে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অভয়াশ্রমে শুধু সুস্থ, স্বাভাবিক ভবঘুরেদের রাখার পরিকাঠামো রয়েছে। ওই ব্যক্তিকে যদি কোনও সংস্থা পুরুলিয়ায়
মানসিক হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ায় উদ্যোগী হয়, আমরা পাঠানোর খরচ বহন করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement