আউশগ্রাম থানায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। —নিজস্ব চিত্র।
এক বধূকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন সিভিক ভলান্টিয়ার। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে। ওই এলাকার এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে আউশগ্রাম থানার পুলিশ। ওই থানাতেই কর্মরত ছিলেন তিনি। তবে স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
আউশগ্রামের নৃপতিগ্রামের বাসিন্দা অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। স্থানীয় সূত্রে খবর, নৃপতিগ্রামের দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। সেই ঝামেলা মেটাতে গ্রামের কয়েক জন সালিশিসভা বসিয়েছিলেন। কিন্তু সেই খবর পেতেই বাধা দেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। গ্রামবাসীদের তিনি জানান, এই ধরনের সালিশিসভা করার ক্ষেত্রে পুলিশের কোনও নিয়ম নেই। সেই কথা জানিয়ে এলাকা ছাড়েন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার।
শুক্রবার রাতে স্থানীয় এক বধূ আউশগ্রাম থানায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। মহিলার অভিযোগ, অভিযুক্ত আগে থেকেই তাঁর উপর কু-নজর দিতেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ফাঁকা বাড়ির সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত যুবক তাঁর বাড়িতে চড়াও হন। তাঁকে শ্লীলতাহানি করেন বলেও অভিযোগ। সেই অভিযোগ পেয়েই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। যদিও ধৃতের দাবি, ওই পাড়ায় বেআইনি চোলাইমদের কারবার চলে। নিষেধ করায় বচসা হয়। এর পর মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে। জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ জানান, এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি এলাকায় বেআইনি চোলাই মদের কারবার বন্ধ করার চেষ্টা করছিলেন। সেই কারণেই তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই সিভিক ভলান্টিয়ার প্রতিনিয়ত এলাকার খবরাখবর থানায় জানাতেন।
সম্প্রতি আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকেই আলোচনায় সিভিক ভলান্টিয়ারের ভূমিকা। এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিও পেশায় এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার। চিকিৎসক খুনের নৃশংসতার ছবি দেখে শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পূর্ব বর্ধমানের ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের ‘দাদাগিরি’র ছবি প্রকাশ্যে আসে। রাতে ডিউটিতে থাকা এক মহিলা চিকিৎসককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। এ ছাড়াও কলকাতার বিটি রোডে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও এক সিভিক ভলান্টিয়ারের ‘কীর্তি’ সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিল। অভিযোগ, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীদের প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্যে ঢুকে পড়ে তিনি ‘অভব্য’ ব্যবহার করেন। চলতি মাসের গোড়ার দিকে ইসলামপুরে এক তৃণমূল নেতার ভাইঝিকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। সেই আবহেই আউশগ্রামে একই ঘটনা ঘটল।