পুলিশের সঙ্গে ধৃত। নিজস্ব চিত্র
বেআইনি ভাবে খাদ্যসামগ্রী মজুত ও রেশন সামগ্রী পাচার করার অভিযোগে শনিবার রাতে ভাতারের কুবাজপুর বাজার এলাকা থেকে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত সালাম শেখ ভাতারের বিজয়পুর গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন সন্ধেয় কুবাজপুর বাজারে ধৃতের দোকান ঘরে হানা দেওয়া হয়। কথায় অসঙ্গতি পেয়ে ব্যবসায়ীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে গুদামে হানা দিয়ে বেআইনি ভাবে মজুত করা চাল, গম, আটা-সহ নানা জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়। রবিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে বিচারক শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যবসায়ীর তিন গুদাম থেকে ৮৬ বস্তা চাল (৫০ কেজি বস্তা), ৫৬ বস্তা গম, ১১১ বস্তা আটা, খাদ্যসাথীর লেবেল সাঁটানো আরও দুশো প্যাকেট আটা, ৩৪২৫টি খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের লেবেল দেওয়া খালি প্যাকেট মিলেছে। পুলিশের দাবি, ভাতারের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে বেআইনি ভাবে রেশন সামগ্রী মজুত করার খবর রয়েছে। বেশ কিছু রেশন ডিলারও ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। ঘটনাটি নিয়ে চুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে ভাতার থানা। রবিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে তাঁর আইনজীবী অতনু সরকার জামিনের আবেদনে বলেন, ‘‘ধৃত বিশেষ ভাবে সক্ষম। তাঁর ট্রেড লাইসেন্সও রয়েছে।’’ ট্রেড লাইসেন্স ও শরীর সংক্রান্ত শংসাপত্রও আদালতে জমা করা হয়। সরকারি আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজিরার শর্তে ধৃতের জামিন মঞ্জুর করেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।
পশ্চিমবঙ্গ এম আর রেশন ডিলার সংগঠনের পূর্ব বর্ধমানের সম্পাদক পরেশনাথ হাজরা বলেন, ‘‘যদি কোনও রেশন ডিলার এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সংগঠন কোনও ভাবেই তাঁর পাশে দাঁড়াবে না। বেশ কিছু উপভোক্তা রেশন সামগ্রী বিক্রি করে দিচ্ছেন। আরও প্রশাসনিক নজরের প্রয়োজন।’’ আমারুন ২ পঞ্চায়েতের প্রধান অজয় সিংহ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী খাদ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষকে চাল, গম, আটা-সহ রেশন সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আর এক শ্রেণির মানুষ সেগুলি খোলা বাজারে বিক্রি করে অপরাধ করছেন। যাঁর রেশন সামগ্রী প্রয়োজন নেই, তাঁরা যেন রেশন সামগ্রী না তোলেন, এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলার প্রয়োজন।’’